মহানন্দার চর দেদার বিক্রি হচ্ছে পোড়াঝাড়ে, জানেই না প্রশাসন!
বর্তমান | ০৩ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া পোড়াঝাড়ে মহানন্দা নদীর চর জবর দখলে ভরে গিয়েছে। কর আদায়, মিউটেশন বন্ধ রেখেও ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভার এই এলাকায় নদীর চর অবৈধভাবে বিক্রি আটকানো যায়নি। অভিযোগ, এখনও ফুলবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে তিস্তা সেচ প্রকল্পের অধিগৃহীত এই জমি দেদার বিক্রি হচ্ছে। নদীর চরে অবৈধ বসতি গড়ে ওঠায় রাজ্য সরকারের উপর পুনর্বাসন বা ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব চাপছে।
পোড়াঝাড়ে মহানন্দা নদীর চরে অবৈধ বসতি প্লাবিত হলে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারকে বিপুল অর্থ খরচ করতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্নস্তরে চর্চা শুরু হয়েছে। মহানন্দা নদী তিস্তার তুলনায় শান্ত হলেও কোনওদিন যে রুদ্র মূর্তি ধারণ করবে না, সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না নদী বিশেষজ্ঞরা। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রধান অধ্যাপক দীপক সরকার বলেন, প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে নদীর গতিপথ অবরুদ্ধ করে জনবসতি গড়ে ওঠা তিস্তার মতো অন্যান্য নদীগুলিও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। ঘনঘন গতিপথ পরিবর্তন করছে। মহানন্দার গতিপথেও ক্রমাগত বাধা তৈরি হচ্ছে। এতে মহানন্দাও যে কোনওদিন রুদ্র মূর্তি ধারণ করতে পারে।
গতবছর তিস্তার জলে লালটং-চমকডাঙি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র জমি দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে রাজ্যসরকার। সেই জায়গা থেকে প্রশাসনের একটি অংশ মনে করছে, এ ধরনের অবৈধ দখল, বিশেষ করে নদীর চরে বসতি গড়ে ওঠার শুরুতেই তা বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। সেখানে পোড়াঝাড়ে সেচদপ্তরের অধিগৃহীত এই জমি দখল করে অবাধে বসতি গড়ে উঠছে। যদিও এই চর বিক্রির বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা জানেন না বলে দাবি করেছেন।
এই অঞ্চলে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্য মনীষা রায় বলেন, মানুষ জেনে বুঝেই নদীর চর দখল করে বসবাস করছেন। অস্বাভাবিক বৃষ্টি হলে মহানন্দার জলে এই অঞ্চলের অনেক এলাকা ডুবে যাবে। বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এতে সরকারের উপর অবৈধ বসতিরও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের বিপুল খরচ বহনের দায় চলে আসবে। পোড়াঝাড়ে এধরনের অবৈধ বসতির কথা আমাকে কেউ জানায়নি। এ নিয়ে আমি ওই অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে কথা বলব। যাতে এভাবে মহানন্দা নদীর চরে বসতি গড়ে তোলা না হয়। এভাবে জেনে বুঝে সরকারের উপর অহেতুক ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের খরচের চাপানো ঠিক নয়। মহানন্দার চরে গড়ে উঠেছে বসতি। - নিজস্ব চিত্র।