নিজস্ব প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ: সোমবার কালীগঞ্জের মাটিয়ারি ও ফরিদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচারে ঝড় তুললেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী আলিফা আহমেদ। এদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগের পাশাপাশি এলাকার রাস্তা, বাজার ও হাটে ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে তিনি কথাবার্তা বলেন। তাঁদের সমস্যা, চাহিদার কথা মন দিয়ে শোনেন। পাশাপাশি উন্নয়ন এবং প্রয়াত-বিধায়ক তথা বাবা নাসিরউদ্দিন আহমেদের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি তিনি দেন।
প্রসঙ্গত, মাটিয়ারি ও ফরিদপুর এই দুই পঞ্চায়েত এলাকা গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির দখলে ছিল। মাটিয়ারি পঞ্চায়েতে প্রায় ৫০০ ভোট এবং ফরিদপুরে প্রায় ৮০০ ভোটে এগিয়েছিল বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই দুই এলাকাতেই তুলনামূলকভাবে হিন্দু ভোট বেশি। যা বিজেপির শক্ত ভিত হিসেবে চিহ্নিত। তাই উপ নির্বাচনের ঠিক আগে এই এলাকাগুলিতে তৃণমূল প্রার্থীর সক্রিয় প্রচার কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
প্রয়াত তৃণমূল বিধায়কের কন্যা আলিফা আহমেদ এদিন সকাল থেকেই প্রচারে নেমে পড়েন। প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে মানুষকে অভিবাদন জানান। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বাজারে স্থানীয় দোকানদার ও ক্রেতাদের সঙ্গেও কথা বলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ে খুঁটিনাটি জানতে পারেন। বিশেষ করে মহিলারা প্রচুর উৎসাহী ছিলেন। এলাকার প্রবীণ মানুষজনের কাছ থেকে ভোট যুদ্ধ জয়ের জন্য আশীর্বাদ নিতেও দেখা যায়। আবার কখনও তৃণমূল প্রার্থী শিশুদের কোলে নিয়ে আদর করলেন।
এদিন সকাল ৯টায় ফরিদপুর পঞ্চায়েতের রাম-সীতা মাঠ থেকে প্রচার কর্মসূচি শুরু হয়। সেখানে হরিপুরপাড়া এলাকায় জনসংযোগ করা হয়। তারপর বিকেলে রাম-সীতা পাঠ ও বাস্তুতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পথসভা করা হয়। সেই কর্মসূচি রাত পর্যন্ত চলে।
এদিন বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিল। আলিফা তখন বিজেপির লিড থাকা এলাকাগুলিতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচারে চষে বেড়ালেন। এটাকে রাজনৈতিক মহল কৌশলী ও আত্মবিশ্বাসী পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছে। তাদের মতে, এতে নির্বাচনী লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মনোবল যেমন বাড়বে, তেমনই বিজেপির ভোটবাক্সেও প্রভাব পড়তে পারে।
প্রচার শেষে তৃণমূল প্রার্থী বলেন, মানুষের মধ্যে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। বিশেষ করে মহিলাদের উৎসাহ চোখে পড়ার মতো। সকলেই আমাদের পাশে থাকার কথা বলছেন। আমি আশাবাদী উপনির্বাচনে মাটিয়ারি ও ফরিদপুর পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আমরা যথেষ্ট লিড পাব। সেই লক্ষ্যেই আমরা দলবদ্ধভাবে কাজ করছি।
তবে এই দুই পঞ্চায়েত এলাকার উপর নজর রয়েছে বিজেপিরও। মেরুকরণের রাজনীতিকে ঢাল করেই হিন্দু ভোট নিজেদের ঝুলিতে টানতে চাইছে বিজেপি। এদিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর প্রার্থী আশিস ঘোষ বলেন, আমরা মাটিয়ারি ও ফরিদপুর পঞ্চায়েত সহ দেবগ্রাম কালীগঞ্জ গোবড়া পঞ্চায়েত ও বিশেষভাবে নজর দিচ্ছি। কালীগঞ্জ বিধানসভার ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৯টি পঞ্চায়েতেই আমরা লিড পাব।