এই সময়: বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ ছোট হতে শুরু করবে ছায়া। তার পর সময় যখন সকাল ১১টা ৩৪ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড, ঠিক তখনই কায়ার সঙ্গে ছায়া পুরোপুরি মিশে গিয়ে ছায়াশূন্য হয়ে যাবে মহানগর।
এমন দিনকে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের পরিভাষায়, বলা হয় ‘জ়িরো শ্যাডো ডে’। ২৩.৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ২৩.৫ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে থাকা যে কোনও অঞ্চলই বছরে দু’বার এমন ভাবে কিছুক্ষণের জন্য ছায়াশূন্য হয়।
কলকাতা আজ, বৃহস্পতিবার এ বছর প্রথম বারের জন্য এই অভিজ্ঞতা পেতে চলেছে। মাস খানেক পর, ৭ জুলাই সকাল ১১টা ৪১ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে কলকাতা আরও একবার ছায়াশূন্য হবে।
এ বছরে প্রথম বার কলকাতার এমন ‘জ়িরো শ্যাডো ডে’ নিয়ে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের বিজ্ঞান আধিকারিক বিপাশ দাশগুপ্ত বলেন, ‘জ্যোতির্বিজ্ঞান এই বিষয়টিকে অস্বাভাবিক হিসেবে দেখে না। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে এই বিষয়টি অবাক করা। আসলে ছোট হতে হতে কিছুক্ষণের জন্য ছায়ার এমন ভাবে মিলিয়ে যাওয়ার এই ঘটনা তো প্রতিদিন ঘটে না।’
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পৃথিবী নিজের অক্ষের উপর ২৩.৫ ডিগ্রিতে হেলে পড়ে সূর্যের চার দিকে প্রদক্ষিণ করছে। এর প্রভাবেই উত্তরে কর্কটক্রান্তি রেখা ও দক্ষিণে মকরক্রান্তি রেখার মধ্যবর্তী অঞ্চলের প্রতিটি এলাকাতেই বছরে দু’বার এমন ছায়াশূন্য দিন আসে।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, শুধু কলকাতা নয়, ১৪ জুন বর্ধমান, ১৭ জুন কৃষ্ণনগর এবং ১৯ জুন মায়াপুরে একই ঘটনা ঘটতে চলেছে।
ছায়াশূন্য হওয়ার ব্যাপারটা মাত্র কয়েক মিনিট স্থায়ী হলেও বিজ্ঞানের জগতে এর ভূমিকা অপরিসীম। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে গ্রিক বিজ্ঞানী এরাটোস্থেনিস জ্যোতির্বিজ্ঞানের এই ঘটনা কাজে লাগিয়েই প্রথম বার প্রায় নিখুঁত ভাবে পৃথিবীর পরিধি নির্ণয় করেছিলেন।