এই সময়, গোপীবল্লভপুর: পঞ্চায়েত সদস্যের সই জালিয়াতি করে স্কুলের তহবিলের আড়াই লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছেন এক প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলে অভিযোগ। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের তপসিয়া অঞ্চলের জুগডিহা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা।
বেলিয়াবেড়া থানায় অভিযোগ জানান তপসিয়া চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক রথীন সরেন। জেলা বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান জয়দীপ হোতা জানান, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে বিষয়টি জানিয়েছি। পরিতোষ পাতর নামে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, জুগডিহা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭৬ জন পড়ুয়া রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ছাড়া দু’জন সহ-শিক্ষিকা জপমালা মল্লিক, লক্ষ্মীপ্রিয়া ঘোষ, একজন সহ-শিক্ষক খোকন মাইতি এবং একজন পার্শ্বশিক্ষক উত্তম দাস ওই স্কুলে রয়েছেন।
গত বছর মার্চ মাসে ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন পরিতোষ। তারপরে স্কুলে নতুন ভিলেজ এডুকেশন কমিটি গঠন হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ওই কমিটির সভাপতি হলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মহেশ্বরী সিং ও সম্পাদক প্রধান শিক্ষক।
গত কয়েক মাস আগে স্কুলে মিটিং ডেকেছিলেন মহেশ্বরী। মিটিংয়ে প্রধান শিক্ষক আসেননি। তারপরই খোঁজ নিয়ে মহেশ্বরী জানতে পারেন তাঁর সই জাল করে আ্যকাউন্ট থেকে আড়াই লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।
মহেশ্বরী বিষয়টি তপসিয়া চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানান। মহেশ্বরী বলেন, ‘আমার সই জাল করে স্কুলের সমস্ত টাকা তুলে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। তারপর থেকে উনি স্কুলেও আসছেন না। ফোনও ধরছেন না। বিষয়টি অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানিয়েছি।’
গত মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে স্কুলে আসেননি প্রধান শিক্ষক। এমনকী গত বুধবার স্কুলে মিড-ডে মিল হয়নি বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার টিফিনের পরে স্কুল ছুটি হয়ে যায়। স্কুলের সহ-শিক্ষিকা জপমালা ও পার্শ্বশিক্ষক উত্তম এ দিন স্কুলে এসেছিলেন।
জপমালা বলেন, ‘বিষয়টি আমিও গত কয়েক মাস আগে জানতে পেরেছি। প্রধান শিক্ষক ওই টাকা ছাড়াও মিড-ডে মিলের সমস্ত টাকা তুলে নিয়েছেন। মুদি দোকানে ৩২ হাজার টাকা বাকি রয়েছে। বিষয়টি অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক জানেন।’
তপসিয়া চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক রথীন সরেন বলেন, ‘স্কুল ফান্ডের প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা তছরূপ করেছেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে।’
বেলিয়াবেড়া থানার পুলিশ জানিয়েছেন, মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। যদিও অভিযুক্তকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি এসএমএসেরও।