নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: শো-অফের জমানা। আর সেই স্রোতে গা ভাসাচ্ছে কিশোর থেকে যুবক। বন্ধুদের সামনে একটু চটক না দেখালে হয়! তার জন্য রোজ পাবে পার্টি, দামি আধুনিক ড্রেস আরও কত কি! কিন্তু সেই খরচের টাকা দেবে কে? অন্যের ঘাড়ে কাঁঠাল ভাঙতে না পেরে নিজের বাড়িতেই চুরি করল এক যুবতী। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা খোদ শিলিগুড়িতেই। নিজের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে মায়ের সোনার গয়না চুরি করে পুলিসের হাতে গ্রেপ্তার মেয়ে। ধৃত যুবতীর নাম মুসকান গুরুং। সে প্রধাননগর থানার পঞ্চনই নদী সংলগ্ন অগম সিং নগরের বাসিন্দা। মোটা টাকা পকেটে পুড়তে মায়ের গয়না চুরির পর সে বিধান মার্কেটের একটি সোনার দোকানে বিক্রি করেছিল। চুরির গয়না কেনার অভিযোগে সেই সোনার দোকানের মালিক উৎকর্ষ সোনিকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬ মে অভিযুক্তের মা মঞ্জু গুরুং অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি ৩০ মে বাড়ি ফেরেন। অলঙ্কারের খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন, আলমারি থেকে তাঁর দু’টি সোনার চেন গায়েব। ওই দু’টি চেনের আনুমানিক ওজন প্রায় ৩৫ গ্রাম। যার বাজার মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা। এরপরই বাড়ির লোকেদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে কেউ তাঁকে এ বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। ৪ মে প্রধাননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, মঞ্জুদেবী অসুস্থ থাকাকালীন কেউ তাঁদের বাড়িতে যায়নি। তাঁর মেয়ে সেই সময় বাড়িতে ছিল। তদন্তকারীদের মঞ্জুদেবীর মেয়ের উপর সন্দেহ হয়। পুলিস তদন্তে নামতেই বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায় মেয়ে।
বৃহস্পতিবার পুলিস জানতে পারে, শালবাড়ি এলাকায় এক বন্ধুর বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছে মুসকান। পুলিস গিয়ে তাকে তুলে নিয়ে আসে। থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করলে প্রথমদিকে নিজের দোষ স্বীকার করতে চায়নি অভিযুক্ত যুবতী। তবে লাগাতার জেরায় চাপে পড়ে চুরির বিষয়টি স্বীকার করে নেয়। এরপর তাকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি সে জানায়, বিধান মার্কেটের একটি সোনার দোকানে চেন দু’টি বিক্রি করেছে। রাতেই ওই সোনার দোকানের মালিক উৎকর্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে সোনার চেন দু’টি কেনার বিষয় স্বীকার করে।
মুসকান জানিয়েছে, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে পার্টি করা, ব্র্যান্ডেড ড্রেস, সানগ্লাস কেনার জন্য সে মায়ের গয়না চুরি করে বিক্রি করেছিল। প্রধাননগর থানার পুলিসের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। ধৃতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।