বন্যপ্রাণীদের নির্বিঘ্নে প্রজননের স্বার্থে ৩ মাস কেউ ঘুরতে যেতে পারবেন না সুন্দরবনে
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৮ জুন ২০২৫
আপাতত তিন মাসের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল বন দপ্তর। আগামী ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভে পর্যটকদের প্রবেশে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল। ফলে বর্ষার মরশুমে একসঙ্গে সুন্দরবনের সৌন্দর্য্য দর্শন এবং লঞ্চে বসে ইলিশের স্বাদ নেওয়ার মনোবাঞ্ছা আপাতত মুলতুবি রাখতে হবে ভ্রমণ পিপাসুদের।
জানা গিয়েছে, এখন বন্যপ্রাণীদের প্রজননের সময় হওয়ায় বন দপ্তর এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুন্দরবনের প্রাণীদের সুরক্ষা ও প্রজননের সুবিধার জন্যই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা প্রথম নয়। এই নিয়ে পরপর তিন বছর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বনদপ্তর। বিশেষ করে সুন্দরবনের ব্যাঘ্র প্রজনন ও সংখ্যা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করতেই দূরদর্শী এই পরিকল্পনা।
এব্যাপারে রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ইন্ডিয়া টুডে-কে বলেন, ‘ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানের অধীনেই এই পরিকল্পনা অন্তর্গত। পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের সমস্ত জঙ্গলেরই কোর এরিয়াতে এই নিয়ম কার্যকর করা হয়। আমরা সবসময় এই নিয়ম মানার চেষ্টা করি, একটি শান্ত পরিবেশ তৈরি ও পশু-পাখিদের প্রজনন বাড়ানোর জন্য।’
প্রসঙ্গত, সুন্দরবন এখন ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায়। এখানে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির কুমির, ঘড়িয়াল, স্পটেড ডিয়ার এবং ২৯০ প্রজাতির পাখির বাস। সুন্দরবনে রয়েছে ২১৯ ধরনের জলজ প্রাণী ও ৩৪৪ ধরনের গাছ। বন্যপ্রাণীদের প্রজননের সময় বা পিক মেটিং সিজন হল জুন,জুলাই ও অগস্ট মাস। এই সময়ে বাঘ, হরিণ সহ বন্যপ্রাণীরা যেমন মিলিত হয়, তেমনই কুমির ও সাপ থেকে শুরু করে কচ্ছপ উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ডিম পাড়ে। প্রাণীদের নির্বিঘ্নে এবং নির্জনে এই প্রজননের সুবিধার্থে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এই সময়ে যাতে পশু-পাখিদের কেউ বিরক্ত করতে না পারে, সেজন্যই এই সিদ্ধান্ত। এভাবে বন্যপ্রাণীর প্রজনন বাড়াতে চাইছে বন বিভাগ।