• কাঞ্চনজঙ্ঘা চূড়া জয়ের স্বপ্ন আপাতত অধরা, চন্দননগরের ‘পাহাড় কন্যা’ বললেন...
    এই সময় | ০৮ জুন ২০২৫
  • কোথায়, কখন থামতে হবে সেটা জানা উচিত। জীবন থাকলে ফের পর্বতারোহণ হবে। এমনটাই মনে করেন চন্দননগরের পর্বতারোহী পিয়ালী বসাক। এ বার কাঞ্চনজঙ্ঘা জয়ের স্বপ্ন অধরা রেখে মাঝপথেই তাঁকে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। পাহাড়ে খারাপ আবহাওয়া ও নিজের শরীর অসুস্থ থাকার জন্য আর ঝুঁকি নেননি পিয়ালী। তাই শনিবারই নেপাল থেকে বাড়ি ফিরছেন এভারেস্ট জয়ী পর্বতারোহী।

    দু’বছর আগে মাকালু ও অন্নপূর্ণা জয়ের পর এ বার লক্ষ্য ছিল শিশাপাংমা। কিন্তু চিন অনুমতি না দেওয়ায় সেই অভিযান হয়নি। তার পরিবর্তে তিনি কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় আহরণ করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর ১৬তম অভিযান ছিল শিশাপাংমা। এর আগে পিয়ালী আট হাজার মিটার উচ্চতার মানাসুলু, ধৌলাগিরি, লোৎসে, অন্নপূর্ণা, মাকালু ও এভারেস্ট জয় করেছেন। ২০২২ সালে তিনি এভারেস্ট জয় করেছিলেন। এ ছাড়াও আরও সাতটি শৃঙ্গ জয় করেছেন, যেগুলো আট হাজার মিটারের কম। এখনও পর্যন্ত তিনি ১৫ বার অভিযান করেছেন।

    গত এক বছরের মধ্যে পিয়ালীর মা স্বপ্না ও বাবা তপন বসাক প্রয়াত হয়েছেন। তাঁরা সব সময়ে পিয়ালীকে উৎসাহ দিতেন। মা ও বাবার অনুপস্থিতি আজও তাঁকে কুঁড়েকুঁড়ে খায়। কিন্তু মন ভালো রাখতে ও বাবা-মায়ের স্মৃতি আঁকড়ে ফের পর্বতারোহণে বেরিয়ে পড়েন চন্দননগরের পিয়ালী। পাহাড় কন্যা পিয়ালী মাকালু অভিযানের সময়ে একেবারে মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক মাস তিনি নেপালের কাঠমাণ্ডু হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এ বারেও তাঁর অভিযান যথেষ্ট কঠিন ছিল। কিন্তু তিনি ভয় পাননি।

    পিয়ালী বলেন, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘাতে আগে ওঠা হয়নি। তাই এ বার যখন শিশাপাংমা অভিযান হল না। ঠিক করলাম, কাঞ্চনজঙ্ঘা উঠব। সব ঠিকই ছিল। খুব ভালোভাবেই উঠছিলাম।’ কিন্তু ক্যাম্প ফোর থেকে তাঁকে ১ হাজার মিটার দূরে থামতে হয়। কারণ সেখানে তাঁর শরীর খারাপ হয়। সেই সঙ্গে আবহাওয়াও খারাপ হতে শুরু করে। এর পর তিনি আর এগোননি।

    পিয়ালী বলেন, ‘পাহাড় চড়ার জেদ থাকার পাশাপাশি সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে জানতে হয়। যতটা পাহাড় চড়া হয়, ততটাই ফিরে আসার ক্ষমতা থাকা দরকার। জীবন থাকলে আবার অভিযান হবে। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পর্বতারোহী হয়ে ওঠাই পিয়ালীর স্বপ্ন। তাঁর ইচ্ছে সব মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গগুলো আহরণ করার।’

  • Link to this news (এই সময়)