নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পারিবারিক বিবাদের জেরে ভাইকে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাল দাদা। শনিবার সকালে নন্দীগ্রাম থানার দীনবন্ধুপুর গ্রামে ওই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। জখম ভাইয়ের নাম আদিত্য দাস। নন্দীগ্রাম সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। শরীরে মোট আটটি সেলাই পড়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত আদিত্যর দাদা শ্রীকৃষ্ণ দাসকে এলাকার লোকজন ধরে পুলিসের হাতে তুলে দিয়েছে। তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীকৃষ্ণ প্রায়ই মদ্যপ অবস্থায় থাকে। তার দু’জন স্ত্রী। অস্বাভাবিক আচরণের কারণে দুই স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। অভিযুক্ত শ্রীকৃষ্ণ প্রায়ই তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলায় জড়াত বলে অভিযোগ। প্রায় ১৫ দিন আগে ভাইয়ের বাড়ির অ্যাসবেস্টসের ছাউনিও ভেঙে দিয়েছে। এনিয়ে গ্রামে সালিশি সভা হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দীনবন্ধুপুরের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আক্রামের উপস্থিতিতে ৮ জুন রবিবার সালিশি সভা হওয়ার কথা ছিল। তার আগে শনিবার সকাল ৯টায় আচমকা ছুরি দিয়ে আদিত্যকে কোপায় শ্রীকৃষ্ণ।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে আদিত্য দাস সহ আরও চার-পাঁচজন স্থানীয় কবীর খানের মুদি দোকানে বসেছিলেন। সেখানে হাতের মুঠোর মধ্যে একটি ছুরি নিয়ে হাজির হয় শ্রীকৃষ্ণ। সালিশি সভা ডাকার জন্য আচমকা গালিগালাজ করে ভাইয়ের উপর আক্রমণ করে। আদিত্যর পাশে বসে থাকা স্থানীয়দের ধারণা ছিল, অভিযুক্ত ঘুসি মারছে। কিন্তু, হাত ও ঘাড় থেকে গল গল করে রক্ত গড়িয়ে পড়ায় তাঁরা শ্রীকৃষ্ণের হাত চেপে ধরেন। এরপর স্থানীয়রা তাঁর হাত থেকে ওই ছুরি কেড়ে নেন। সেইসঙ্গে গ্রামের সিভিক ভলান্টিয়ারকে ডেকে গোটা বিষয়টি জানানো হয়। খবর পেয়ে নন্দীগ্রাম থানার পুলিস ঘটনাস্থলে যায়। অভিযুক্তকে থানায় তুলে আনা হয়।
দীনবন্ধুপুরের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আক্রাম বলেন, শ্রীকৃষ্ণ বেশিরভাগ সময় অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় থাকে। মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। তার দু’জন স্ত্রীই তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। ভাইয়ের স্ত্রীকে গালিগালাজ করত। এনিয়ে প্রতিবাদ করতেন আদিত্য। কয়েকদিন আগে এরকম একটি ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে ভাইয়ের বাড়ির অ্যাসবেস্টস ভেঙে দিয়েছে। সালিশি সভার জন্য আদিত্য আমার কাছে এসেছিল। রবিবার সেই সভা হওয়ার কথা ছিল। তার আগে শনিবার ভাইকে ছুরি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেছে। আট জায়গায় সেলাই পড়েছে।