• গ্রুপ সি-গ্রুপ ডি’র ভাতা নিয়ে প্রশ্ন হাই কোর্টের, আপাতত স্থগিত রায়দান
    প্রতিদিন | ০৯ জুন ২০২৫
  • গোবিন্দ রায়: এসএসসি-র বাতিল হওয়া গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের সরকারি ভাতা প্রদানে আইনি বাধা! এখনই কোনও টাকা দেওয়া যাবে না, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে রাজ্য সরকারের উদ্দেশে  বলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। রাজ্যের তরফে এনিয়ে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। দু’দফায় সওয়াল-জবাবের পর আপাতত রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।

    সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের এসএসসি-র প্যানেল বাতিলের জেরে চাকরি খারিজ হয়ে গিয়েছে ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর। শিক্ষকদের নতুন করে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি অর্থাৎ অশিক্ষক কর্মীদের জন্য এখনও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। এই সময়ের জন্য সরকারি কোষাগার থেকে তাঁদের যথাক্রমে ২৫ হাজার ও ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে।

    সোমবার সওয়াল-জবাবের সময় আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর যুক্তি,  ”সুপ্রিম কোর্ট বেআইনি নিয়োগের জন্য যাঁদের চাকরি বাতিল করেছে, তাঁদের এই ভাবে টাকা পাইয়ে দেওয়া যায় না। কারণ সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা আছে, সুপ্রিম কোর্টের কোনও নির্দেশ থাকলে তাকে মান্যতা দিতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া ২৬ হাজার চাকরি খারিজের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। আর তারপরেই গ্রুপ সি ও ডি চাকরি খারিজ কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর নামে সরকারি কোষাগার থেকে টাকা দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। জনস্বার্থে সরকারি টাকা দেওয়ার সুযোগ সংবিধানে আছে। কিন্তু সেটা সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর চাকরি খারিজ হওয়াদের জন্য কার্যকর নয়।”

    রাজ্যের তরফে এজি কিশোর দত্ত জানান, ইতিমধ্যে ১ এপ্রিল থেকে এই টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে।এরপরই বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন,  ”এখনই এই টাকা দেওয়া যেন শুরু না হয়। কী করে এত তাড়াতাড়ি টাকা দেওয়া শুরু হয়? আবেদন নেওয়ার পরে তার কিছু পদ্ধতি আছে। সেটা করা হলে এত তাড়াতাড়ি কী করে দেওয়া হবে?”  এজি জানান, রাজ্যের বক্তব্য জেনে তিনি দুপুরে ফের সওয়াল করতে চান। তাতে অনুমতি দিয়েছে আদালত।

    দ্বিতীয়ার্ধ্বে সওয়াল-জবাবের সময় বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানতে চান, ২০ এবং ২৫ হাজার টাকার অঙ্কটা রাজ্য সরকার কিসের ভিত্তিতে নির্ধারিত করল? কত সংখ্যক শিক্ষাকর্মী এই টাকা পাবেন? অতীতে কোন কোন ঘটনায় এরকম আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছিল? তাতে রাজ্য সরকারের তরফে এজি কিশোর দত্ত জানান, একাধিকবার এরকম অর্থ দেওয়া হয়েছে। যেমন পুজো বা অন্যান্য ঘটনায়। বিশেষ খাত থেকে এই টাকা বরাদ্দ করা হয়।

    এরপরও বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, যাঁরা এই টাকা পাবেন, তাঁদের থেকে রাজ্য প্রতিদানে কী পাবে? তাঁরা ঘরে বসে থাকবেন আর টাকা পাবেন? সুপ্রিম কোর্টে একটার পর একটা রিভিউ পিটিশন হতে থাকবে আর এঁরা টাকা পেতে থাকবেন? রাজ্যের কাছে বিচারপতির আরও প্রশ্ন, বেকারদের জন্য কি রাজ্য এই ধরনের কোনও প্রকল্প চালু করেছে বা চালু করার কথা ভাবছে? সওয়াল-জবাব শেষে বিচারপতি সিনহার নির্দশ, এখনই কোনও টাকা দেওয়া যাবে না। তবে এদিন কোনও রায় ঘোষণা করেননি বিচারপতি সিনহা। 
  • Link to this news (প্রতিদিন)