• পেশায় কারখানার শ্রমিক, GST বাকি ৭০০০০০০০ টাকা! রেইড হতেই তোলপাড় পাড়া
    ২৪ ঘন্টা | ১৭ জুন ২০২৫
  • দেবব্রত ঘোষ: পেশায় কারখানার শ্রমিক। মাসিক আয় মাত্র সাড়ে ৯ হাজার টাকা। অথচ তার নাকি ৭ কোটি টাকা জিএসটি(GST)বাকি। তাই বকেয়া আদায় করতে ডোমজুড়ের বাড়িতে আধিকারিকদের হানা এবং তল্লাশি। এমনই তাজ্জব ঘটনায় বিপর্যস্ত ডোমজুড়ের যুবক কার্তিক রুইদাস।


     


    স্থানীয় সূত্রে খবর ডোমজুড়ের খাটোরার বাসিন্দা কার্তিক রুইদাস (২৫) ডোমজুড়ের জাতীয় সড়কের ধারে জালান কমপ্লেক্সের একটি কারখানায় কাজ করেন। তার মাসিক বেতন মাত্র সাড়ে ৯ হাজার টাকা। গত বৃহস্পতিবার যখন তিনি কারখানায় কাজ করছিলেন হঠাৎ তার বাড়িতে রাজ্য জিএসটি অফিসের ৬ সদস্যের একটি তদন্তকারী দল হানা দেয়। পরিবারের লোকেদের ফোনে পেয়ে সাইকেলে চেপে কারখানা থেকে তড়িঘড়ি বাড়িতে ফেরেন কার্তিক।

    জিএসটি আধিকারিকরা কার্তিককে বলেন তার ৭ কোটি টাকা জিএসটি বাকি। শুধু তাই নয় কে ডি এন্টারপ্রাইজ নামে কার্তিক একটি কোম্পানির মালিক। সেখানে কার্তিকের নামে ব্যাংক একাউন্টে প্রতি মাসে ৩৬ কোটি টাকা আদানপ্রদান হয়। সে কোটি কোটি টাকা ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে। অফিসারদের মুখে এসব কথা শুনে চোখ কপালে ওঠে কার্তিকের।

    আধিকারিকদের কার্তিক বলেন তিনি সামান্য বেতনে জালান কমপ্লেক্সের একটি কারখানায় কাজ করেন। দিন এনে দিন খাই অবস্থা। ওই সামান্য আয়ে স্ত্রী এবং বাচ্চাদের নিয়ে সংসার চালান। জীবনে কোনদিন কোন ব্যবসা করেননি। তার ঠিকানা, প্যান কার্ড  আধার কার্ড এবং ইলেকট্রিক বিলের তথ্য ব্যবহার করে কে বা কারা জি এস টি পোর্টালে তার নাম তুলে দিয়েছে। যদিও বাস্তবে তার সঙ্গে মিল নেই।

    কার্তিকের ভাঙাচোরা বাড়ি এবং বাড়ির সামনের সরু রাস্তা দেখে জিএসটি আধিকারিকরা বুঝতে পারেন ওখানে কোন বড় গোডাউন নেই। সরু রাস্তা হওয়ায় সেখানে লরি যাতায়াত কার্যত অসম্ভব। তারা বুঝতে পারেন  এর পেছনে দুষ্কৃতীদের হাত থাকতে পারে। তারা আরো দেখেন জিএসটি পোর্টালে যে দুটি মোবাইল নম্বর আছে সে দুটি ভুয়ো নম্বর। কার্তিকের মোবাইল নম্বর আলাদা।এই ঘটনায় ওই যুবক ডোমজুড় থানা এবং হাওড়া সিটি পুলিসের সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেন।

    পুলিসের তরফে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে কোন সংঘটিত অপরাধ চক্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মাস দেড়েক আগে কার্তিকবাবুর সন্তান হয়েছে। বাড়িতে স্ত্রী এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন। এর মধ্যে হঠাৎ জি এস টি অফিসারদের হানায় আতঙ্কে রয়েছে গোটা পরিবার। ছাপোষা পরিবারটি বুঝে উঠতে পারছে না কখন কী হয়।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)