• রথযাত্রার নিয়ম ঘিরে দ্বন্দ্ব? হঠাত্‍ ইসকনকে কড়া চিঠি পুরীর রাজার
    আজ তক | ১৭ জুন ২০২৫
  • বিদেশে রথযাত্রা উৎসব পালনে যেন কোনও নিয়ম লঙ্ঘন না হয়। ইসকনকে চিঠি দিয়ে জানালেন পুরীর গজপতি মহারাজ। জগন্নাথদেবের আচার পালন ও রথযাত্রা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিশেষ বার্তা দেওয়া হল ইসকন কর্তৃপক্ষকে। মূলত রথাযাত্রা ও জগন্নাথের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ, সময় লঙ্ঘন না করার আর্জি জানানো হয়েছে। স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, বিশ্বজুড়ে ভগবান জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা অনুষ্ঠান এবং রথযাত্রা সংক্রান্ত বিধিগুলি শাস্ত্র অনুমোদিত নির্দিষ্ট তারিখে অনুষ্ঠিত করতে হবে। কোনওমতেই যেন সেই ঐতিহ্য লঙ্ঘন না করে ইসকন। এ প্রসঙ্গে কী বলছেন কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস? 

    পিটিআই সংবাদসংস্থায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, পুরীর জগন্নাথ মন্দির কমিটির চেয়ারম্যান গজপতি মহারাজ দিব্যসিংহ দেব ইসকনকে একটি চিঠিতে লিখেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ইসকন পরিচালিত কিছু মন্দিরে অন্য তারিখে পালন করা হচ্ছে স্নানযাত্রা বা রথযাত্রার মতো অনুষ্ঠানগুলি। বিশেষ করে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা অনুষ্ঠান নির্দিষ্ট দিন ছাড়া অন্যান্য দিনে পালন করা হয়েছে। ইসকন বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় রথযাত্রা পালনের দিনও বদল করেছে। ইসকনের এই পদক্ষেপে অসন্তুষ্ট হয়েছেন গজপতি মহারাজ। তাঁর অভিযোগ, এই ধরনের প্রথা নির্দিষ্ট দিনে পালিত হয়। সেটা অন্যদিনে করা ধর্মীয় বিধি লঙ্ঘন। 

    চিঠি লেখা হয়েছে মায়াপুরের ইসকন গভর্নিং বডি কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রী গোবর্ধন দাস প্রভুকে । তাতে অনুরোধ করা হয়েছে, পৃথিবীর কোথাও কোনও ইসকন মন্দির বা ইসকনের কোনও কেন্দ্র যাতে শাস্ত্র ও ঐতিহ্য লঙ্ঘন না করে। শাস্ত্র অনুমোদিত নয় এমন  তিথিততে যেন জগন্নাথের স্নানযাত্রা বা রথযাত্রা পালন না করা হয়। 

    গজপতি মহারাজা দিব্যসিংহ দেবের লেখা চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে,  ভারতের বাইরে ইসকন দ্বারা চালিত মন্দিরগুলি পবিত্র ধর্মগ্রন্থে অনুমোদিত নয় এমন তারিখ বা তিথিতে স্নানযাত্রা বা রথযাত্রা উদযাপন করছে। ইসকনের কয়েকটি পোস্টের নথিও শেয়ার করে মহারাজ দিব্যসিংহ দেব লেখেন, নিউ ইয়র্ক সিটি, ক্যালগারি এবং লিসেস্টারের ইসকন মন্দিরগুলি এই ধরনের তিথি-বিচ্যুতি ঘটিয়েছে। পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের বিদ্বান পণ্ডিতরা ২০ মার্চ ভুবনেশ্বরে অনুষ্ঠিত সভায় ইসকন পণ্ডিতদের উত্থাপিত মতামতগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখেছেন। তারপরেই পণ্ডিতরা ফের স্পষ্ট করে দিয়েছেন, স্নানযাত্রা শুধুমাত্র জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা তিথিতে (১১ জুন) পালন হয়েছে। রথযাত্রা কেবলমাত্র আষাঢ় শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে অর্থাৎ এই বছর ২৭ জুন থেকে আষাঢ় শুক্লপক্ষ দশমী তিথি অর্থাৎ এই বছর ৫ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। অন্য কোনও তিথিতে এই বিধি পালন করা মানে নিয়ম লঙ্ঘন।

    bangla.aajtak.in-এ রাধারমন দাস বলেন, 'প্রায় ১৫০ দেশে, ৪ হাজারের বেশি শহর ও গ্রামে আমরা রথযাত্রা পালন করি। বিদেশে সাধারণত একই দিনে রথযাত্রা পালন করা সম্ভব হয় না। কারণ বহু দেশে আবহাওয়া অনুকূল থাকে না। অস্ট্রেলিয়াতে জুন-জুলাই মাসে বরফ পড়ে। ফলে ওই সময়ে আমরা সেখানে উৎসব পালনের অনুমতি পাই না। তাই অন্য দিন তা পালন করতে হয়। এবার গজপতি মহারাজ যা বলেছেন, তা বাস্তবে তা কতটা সম্ভব সেটা ভাবনাচিন্তা করার বিষয়। সেক্ষেত্রে দু'টোই রাস্তা, এক, নিয়ম লঙ্ঘন না করে একই দিনে রথযাত্রা পালন করা। অথবা অনুমতি না পেলে উৎসব বন্ধ করে দেওয়া। সেটা তো সম্ভব নয়। অনেক দেশই ছুটির দিন উৎসব পালনের কথা বলে, সেক্ষেত্রে আমাদের দিনক্ষণ এদিক-ওদিক হয়েই যায়। নিয়ম পালন করতে গেলে রথযাত্রাই হবে না।'

     
  • Link to this news (আজ তক)