স্বস্তি, BSF-BGB বৈঠকের পর রায়গঞ্জ দিয়ে দেশে ফিরলেন বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ বাগদার দম্পতি
প্রতিদিন | ১৭ জুন ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে স্বস্তির শ্বাস নিল উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার পরিবার। সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে বাংলায় ফিরে এলেন পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁর স্ত্রী। বাংলার বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক দম্পতি ফজের মণ্ডল ও তসলিমা মণ্ডলকে মহারাষ্ট্রে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বাংলাদেশি সন্দেহে। নিজেদের আসল পরিচয়পত্র দেখানো হলেও পুলিশ কোনও কথা কানে তোলেনি বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ওই দম্পতিকে ‘পুশব্যাক’ করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই কথা জানতে পেরে বাগদায় থাকা ওই দম্পতির পরিবার প্রবল দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন। পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিল ওই পরিবার।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ওই দম্পতিকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। বাগদা থানার পুলিশ উত্তর দিনাজপুর পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বিএসএফের সঙ্গেও এই বিষয়ে যোগাযোগ করে প্রশাসন। গতকাল, রবিবার বিএসএফ-বিজিবির মধ্যে ফ্ল্যাগমিটিং হয়। তারপরই ফজের মণ্ডল ও তসলিমা মণ্ডলকে ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশের ভাতুড়ি গ্রামে ওই দম্পতিকে রাখা হয়েছিল। গতকাল রাতে উত্তর দিনাজপুরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে তাঁরা ফেরেন। প্রথমে তাঁদের রায়গঞ্জের সীমান্ত লাগোয়া ভাটল পুলিশ ফাঁড়িতে আনা হয়। গতকালই বাগদা থেকে রায়গঞ্জে পৌঁছে গিয়েছিলেন ওই যুবকের পরিবারের সদস্যরা। ওই দম্পতিকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ছেলে-বউমাকে ফিরে পেরে খুশি বাবা বাবা তাহাজুল ও মা লতিফা মণ্ডল। তাহাজুল মণ্ডল জানিয়েছেন, ছেলেকে আর পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতে ভিনরাজ্যে পাঠাবেন না। এলাকাতেই কোনও না কোনও কাজ করবেন। ছেলে-বউমাকে ফিরে পাওয়ার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রায়গঞ্জ ও বাগদা থানার পুলিশ, বিএসএফকে ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এত তাড়াতাড়ি ছেলে-বউমাকে ফিরে পাওয়া যেত না। এমনই জানিয়েছেন তাহাজুল। প্রসঙ্গত পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করার জন্য গত দু’মাস আগে স্ত্রীকে নিয়ে মহারাষ্ট্রে গিয়েছিলেন ফজের মণ্ডল। সেখানেই চলতি মাসের ১০ তারিখ ওই দম্পতিকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
সম্প্রতি নয়ানগর থানা এলাকায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। অভিযোগ, কয়েকজন অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে ওই দম্পতিকেও পাকড়াও করা হয়। দম্পতি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাঁরা এদেশের নাগরিক। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা এলাকায় বাড়ি। সঙ্গে থাকা নথিপত্রও তদন্তকারীদের দেখানো হয়। কিন্তু পুলিশ কিছু বিশ্বাস করতে চায়নি বলে অভিযোগ। গত ১০ তারিখ নয়ানগর থানার পুলিশ বাগদার বাসিন্দা যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাঁদের পরিচয়পত্র থানায় পাঠাতে বলা হয়। ফজের মণ্ডলের বাবা তাহাজুল মণ্ডল সেসব নথি কথামতো পাঠিয়েছিলেন। অভিযোগ, তারপরেও ওই দম্পতিকে ছাড়া হয়নি। পরিবারের লোকজন তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি বলে খবর। নয়ানগর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই দম্পতিকে বাংলাদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কথা ওই বাগদার ওই পরিবারের সদস্যরা জানতেও পারেননি। শনিবার সকালে বাংলাদেশের দিনাজপুর থেকে বিজিবির ফোন আসে বাগদার ওই পরিবারের কাছে। জানানো হয়, ওই দম্পতিকে পুশব্যাক করা বাংলাদেশিদের সঙ্গে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।