• মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অনন্য নজির
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০১ জুলাই ২০২৫
  • স্বাস্থ্যসাথী বাঁচিয়ে তুলছে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ। টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় এখন মরতে হয় না কাউকে। বাংলার ঘরে ঘরে ফুটে উঠছে সুস্থ মুখের হাসি। জীবন দান করার প্রকল্প নিয়ে নতুন মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলল মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। উত্তর ২৪ পরগনায় এই মাইলফলক স্পর্শ করল মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথী। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এই জেলাতে প্রায় ২ লক্ষের বেশি মানুষের চিকিৎসার জন্য ব্যয় করা হয়েছে ২৫১ কোটি টাকা। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কত মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় এসে এই পরিষেবা পেয়েছেন।

    ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক জনহিতকর কাজ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমাজের নিম্নস্তরের মানুষদের সাহায্যে তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের রচনা করেন। প্রকল্পের মধ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, রূপশ্রী, আবাস যোজনা, খাদ্যসাথী সহ একাধিক প্রকল্প রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল স্বাস্থ্যসাথী। এই প্রকল্পটি হল একটি স্বাস্থ্য বিমা, যা পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬-তে চালু করে। এই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে প্রত্যেকটি পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ মহিলা সদস্যের নাম এই কার্ডে নথিভুক্ত করা যায়। প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ পুরোটাই বহন করে রাজ্য সরকার। এর ফলে উপকৃত হয়েছেন রাজ্যবাসী। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সুযোগও পেয়েছেন রাজ্যের বাসিন্দারা। এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে জেলা, রাজ্য ও এমনকি দেশের এই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নথিভুক্ত হাসপাতালগুলিতে বিনামূল্যে চিকিৎসা করানো যায়। হাসপাতালে ভর্তির আগেরদিন থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ৫ দিন পর্যন্ত সমস্ত ওষুধ প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত। এমনকি হাসপাতাল থেকে ছুটির সময়ে রোগীর গাড়িভাড়া বাবদও টাকা দেয় সরকার। এই প্রকল্পে ১৯০০-র বেশি রোগের চিকিৎসার জন্য প্যাকেজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একটি পরিবারের সকল সদস্য এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারেন।

    উত্তর ২৪ পরগনায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসাখাতে খরচ এক নজির হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই জেলায় প্রকল্পের আওতায় থাকা উপভোক্তার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৫ লক্ষ। চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন প্রায় ২ লক্ষ ৩ হাজার রোগী। চিকিৎসাখাতে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ২৫১ কোটি টাকা। মার্চের পর এপ্রিল ও মে মাসে জেলায় আরও কয়েক কোটি টাকার চিকিৎসা হয়েছে। নতুন করে ওই বছর প্রায় ১৮ হাজার মানুষ কার্ড করিয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী জানিয়েছেন, ‘রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে জেলার বহু মানুষ চিকিৎসা করাচ্ছেন। আমরা সার্বিকভাবে সব দিকেই নজর রাখি। এর জন্য আমাদের জেলাতেও বিশেষ টিম আছে।’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ‘আমরা গর্বিত যে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প উত্তর ২৪ পরগনায় বাস্তব রূপ নিচ্ছে এবং হাজার হাজার মানুষ এর সুফল পাচ্ছেন। এই পরিষেবার মাধ্যমে স্বাস্থ্যব্যবস্থা অনেকটাই সাধারণ মানুষের নাগালে এসেছে। স্বাস্থ্যসাথীর এই সাফল্যে খুশি চিকিৎসক মহল থেকে শুরু করে স্থানীয় মানুষ। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী দিনে এই স্বাস্থ্যসাথীর আওতা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যাতে গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ এই প্রকল্পের সুফল পান।’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)