কাজের সূত্রে ভিনরাজ্যে, বাংলাদেশি সন্দেহে ওড়িশায় গ্রেপ্তার চন্দ্রকোণার শেখ হানিফ
প্রতিদিন | ০২ জুলাই ২০২৫
শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: কাজের সূত্রে পাশের রাজ্য ওড়িশায় গিয়েছিলেন। বাঙালি বলে বাংলায় হামেশাই কথা বলেন তিনি। সেই বাংলায় কথা বলাই কাল হল! বাংলাদেশি তকমা দাগিয়ে দেওয়া হল সেই রাজ্যে। শুধু তাই নয়, গ্রেপ্তার করে ওই ব্যক্তিকে গারদে পোরা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওড়িশার কটকে বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেপ্তার হয়ে আছেন এই রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার বাসিন্দা শেখ হানিফ আলি। পরিচয়পত্র দেখালেও তাঁকে ছাড়া হচ্ছে না বলে ওড়িশা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ। ধৃতের পরিবার জেলা প্রশাসন-সহ রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে এই বিষয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন বলে খবর।
জানা গিয়েছে, শেখ হানিফ আলি চন্দ্রকোণার ১ ব্লকের বেড়াবেড়িয়া এলাকার বাসিন্দা। পেশায় কাঠের মিস্ত্রী হানিফ ওড়িশার কটকের বারাঙ্গা থানা এলাকায় কর্মরত। দীর্ঘ পাঁচ-ছয় বছর ধরে তিনি ওই এলাকার এক ফার্নিচারের দোকানে কাজ করেন বলে খবর। মাস কয়েক আগে তিনি চন্দ্রকাণার বাড়িতে ফিরেছিলেন। গত মাসে তিনি ফের ওড়িশায় ফিরে যান। আর তারপরেই ঘটে বিপত্তি। ওড়িশা পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁকে পাকড়াও করে বলে অভিযোগ। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড ওড়িশা পুলিশের কাছে দেখানো হয়েছিল। জানানো হয়, তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। কয়েক পুরুষ ধরে চন্দ্রকোণাতেই তাঁদের বসবাস। কিন্তু তারপরও ওড়িশা পুলিশ কোনও কথা কানে তোলেনি বলে অভিযোগ। ওই ব্যক্তিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ।
পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে, পরিচয়পত্র হিসেবে জমি-বাড়ির দলিল দেখাতে হবে। সেই দলিল কমপক্ষে পাঁচবছরের পুরনো হতে পারে। সেখানে শেখ হানিফ আলি-সহ তাঁর বাবার নামও থাকতে হবে। সেই কথা শুনে পরিবারের লোকজন জমি-বাড়ির দলিল সংগ্রহের চেষ্টা করছে। কাগজপত্র নিয়ে ওড়িশা যাওয়ার কথাও মনস্থ করেছে ওই পরিবার। পরিচয়পত্র না পেলে বাংলাদেশে হানিফকে পুশব্যাক করা হবে বলেও ভয় দেখানো হচ্ছে, এমনই অভিযোগ করেছেন ওই ব্যক্তির ভাই রিয়াজ আলি। ঘটনার কথা জানার পর থেকেই আতঙ্কে শেখ হানিফের স্ত্রী ও পরিবার। রাজ্য সরকার, পুলিশ-প্রশাসন তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ করুক। এমনই চাইছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার-সহ একাধিক আধিকারিককে মেইলের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। চন্দ্রকোণার বিধায়ক অরূপ ধারা জানিয়েছেন, বিষয়টি উপরমহলের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। ওই ব্যক্তিকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।