• সিদ্দিকুল্লার ঘটনায় বিরক্ত মমতা, গ্রেপ্তার ৫
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৫ জুলাই ২০২৫
  • রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর উপর হামলা এবং গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করল মন্তেশ্বর থানার পুলিশ। শুক্রবার ধৃতদের প্রত্যেককেই কালনা আদালতে হাজির করানো হয়। বৃহস্পতিবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। সেই ঘটনায় তৃণমূলেরই একাংশের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি।

    এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরক্ত বলে শুক্রবার জানালেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। হামলার ঘটনায় দলের একাংশের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলেছিলেন সিদ্দিকুল্লা। শুধু তা-ই নয়, পুলিশের বিরুদ্ধেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। দিয়েছিলেন দল ছাড়ার হুঁশিয়ারিও। মন্ত্রী জানিয়ে ছিলেন, দল এবং প্রশাসন যদি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করলে প্রয়োজনে দল ছেড়ে দেবেন তিনি। এর পরেই কার্যত নড়েচড়ে বসে তৃণমূল। তাঁকে দলের তরফে ফিরহাদ একাধিক বার ফোনও করেছেন। সে কথা শুক্রবার কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে নিজেই জানিয়েছেন।

    ঘটনার পর জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে যান মন্ত্রী। গোটা ঘটনার কথা তৃণমূলের হাইকমান্ডকেও জানান মন্ত্রী। অভিযোগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ অভিযুক্ততে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, ধৃতরা এলাকায় তৃণমূলকর্মী বা দলের সমর্থক হিসাবেই পরিচিত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় আরও কয়েক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

    একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার আগে বৃহস্পতিবার মন্তেশ্বরে যান সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তাঁর কনভয় মালডাঙা এবং মন্তেশ্বর বাজার এলাকায় পৌঁছোতেই হাতে ঝাঁটা, কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কয়েক জন। তোলা হয় ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। মন্ত্রীকে ‘চিটিংবাজ-ধাপ্পাবাজ’ বলেও আক্রমণ করতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। সেই সময়ে ইট-রড-লাঠি দিয়ে হামলা হয় মন্ত্রীর গাড়িতে। কনভয়ে থাকা মোট পাঁচটি গাড়িতে হামলা চালানো হয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী গত চার বছর ধরে এলাকার খোঁজখবর রাখেননি। উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনও কাজ হয়নি। সূত্রের খবর, মন্ত্রীকে দেখেই কালো পতাকা হাতে নিয়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রফিকুল ইসলাম শেখ। তুমুল চিৎকার শুরু করেন তাঁরা।

    তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আহমেদ হোসেনের অঙ্গুলিহেলনে পুলিশের সামনে গুণ্ডাবাহিনী মন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখায়। মন্ত্রীর দিকে তেড়ে আসেন। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, যে সময় ঘটনা ঘটেছে, সেই সময় পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। পুলিশ ইচ্ছে করলেই তাদের সরিয়ে দিতে পারত। কিন্তু তা করেনি। এই ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন সিদ্দিকুল্লা। দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে সিদ্দিকুল্লা বলেন, ‘এই চক্রান্ত যাঁরা করল, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই সন্ত্রাস যদি বন্ধ না হয়, বলে দিচ্ছি, সিপিএমের আমলে যে রকম আন্দোলন করেছিলাম, সে রকম এ বারও হবে। খুব স্পষ্ট ভাবে বলছি, দল যদি ব্যবস্থা না করে, আগামী ১০ জুলাই কলকাতায় মহামিছিল বার করে এর প্রতিবাদ করব।’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)