• আইআইএম জোকা কাণ্ডে ৯ সদস্যের সিট গঠন করল কলকাতা পুলিশ
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৩ জুলাই ২০২৫
  • আইআইএম জোকা চত্বরে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশ বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল। ডিসি (দক্ষিণ-পশ্চিম)-এর তত্ত্বাবধানে গঠিত এই সিটে রয়েছেন মোট ৯ জন সদস্য। নেতৃত্বে রয়েছেন একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক। ঘটনার পরই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি আইআইএম–এর ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র বলে জানা গিয়েছে। বিচারক অভিযুক্তকে আগামী ১৯ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজ চত্বরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নির্যাতিতা ঠিক কখন কলেজে প্রবেশ করেছিলেন এবং কখন বেরিয়ে গিয়েছেন, তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, হস্টেলে প্রবেশ ও বেরনোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং নজরদারির পদ্ধতিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার জেরে রাজ্য মহিলা কমিশনও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, তারা তদন্তের উপর কড়া নজর রাখছে।

    অভিযোগ অনুসারে, গত শুক্রবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ওই তরুণী কাউন্সেলিংয়ের উদ্দেশ্যে অভিযুক্ত ছাত্রের সঙ্গে দেখা করতে আইআইএম জোকা ক্যাম্পাসে যান। পরে অভিযুক্ত তাঁকে বয়েজ হস্টেলের ঘরে নিয়ে যান। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, তাঁকে পিৎজা ও জল খেতে দেওয়া হয়, যেখানে কিছু মাদকজাতীয় পদার্থ মেশানো ছিল বলে সন্দেহ। এরপরই তিনি অসুস্থ বোধ করতে থাকেন এবং বমির প্রবণতা দেখা দিলেও তাঁকে শৌচাগারে যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

    নির্যাতিতা লিখিত বয়ানে জানান, কথোপকথনের সময় অভিযুক্ত আচমকা তাঁর চুল ধরে টান দেন এবং মাথায় আঘাত করেন, যার ফলে তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। অচেতন অবস্থায় তিনি ধর্ষণের শিকার হন বলে দাবি করেন। পরে জ্ঞান ফিরে এলে নিজে হরিদেবপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে উঠে এসেছে, হস্টেলে প্রবেশের আগে নির্যাতিতার নাম রেজিস্টারে লিখতে দেননি অভিযুক্ত, যা কলেজের নিরাপত্তা প্রোটোকল লঙ্ঘনের সামিল।

    এদিকে তরুণীর বাবা সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেন, তাঁর মেয়ের উপরে কোনও রকম অত্যাচার হয়নি এবং কেউ খারাপ ব্যবহারও করেননি। যদিও আদালতে এই বক্তব্য পুনরায় পেশ করা হয়নি। শনিবার শুনানিতে নির্যাতিতার বাবা অবশ্য উপস্থিতও ছিলেন না। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার তদন্তে কলকাতা পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশের পাশাপাশি আইআইএম কর্তৃপক্ষও নিজস্বভাবে ঘটনা খতিয়ে দেখছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)