এই সময়: ১৭ মিলিমিটার, ৫.৭ মিলিমিটার এবং ৪২.৩ মিলিমিটার — সোম থেকে বুধ, ৭২ ঘণ্টায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি পেয়েছে কলকাতা। বলা যেতে পারে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে প্রায় ১ মিমি করে বৃষ্টি হয়েছে শহরে। অর্থাৎ গত ৭২ ঘণ্টাই বৃষ্টি পেয়েছে মহানগর।
বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে, ওডিশা ও বাংলার সীমানা বরাবর এলাকায় একটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হওয়ার জন্যই দক্ষিণবঙ্গে গত তিন দিন এমন বৃষ্টি। তবে নিম্নচাপটি আপাতত বাংলা ছেড়ে প্রতিবেশি ঝাড়খণ্ড ও বিহারের উপরে সরে যাওয়ায় বাংলার বৃষ্টি–ভাগ্যে কিছুটা ভাটা পড়ার সম্ভাবনা।
বৃষ্টির পরিমাণ কমলেও পুরোপুরি থামবে না বলে মনে করছেন আবহবিদরা। নিম্নচাপ সরলেও বাংলার আকাশ ছাড়েনি মেঘের ঘন আস্তরণ। তাই, ২২ জুলাই পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটা জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ওই সময়ে বৃষ্টি পেতে চলেছে উত্তরবঙ্গের সবক’টি জেলাই।
রোদের দেখা মিললেও সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। ভার থাকবে আকাশের মুখ। মাঝে মাঝেই নেমে আসবে হালকা থেকে মাঝারি দু’এক পশলা বৃষ্টি। বয়ে যাবে জোরালো বাতাস। তবে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা তেমন নেই। দক্ষিণবঙ্গের ১৫টি জেলা সম্পর্কে সামনের মঙ্গলবার, ২২ জুলাই পর্যন্ত এমনটাই পূর্বাভাস দিচ্ছে আলিপুর হাওয়া অফিস।
আসলে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে গেলেও তার প্রভাবে সমুদ্র থেকে ঢুকে আসা জলীয় বাষ্পর পরিমাণ এখনও খুব বেশিই। ওই জলীয় বাষ্পর স্রোত বাংলার উপকূলবর্তী জেলাগুলোর উপর দিয়ে এগিয়ে বাঁ-দিকে বেঁকে ঝাড়খণ্ড অভিমুখে এগিয়েছে।
এই কারণেই উপকূলবর্তী জেলাগুলোর পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম দিকের জেলাগুলোয় বৃষ্টির প্রাবল্য কিছুটা বেশি থাকবে। জুন এবং জুলাইয়ের এ পর্যন্ত বাংলার বিভিন্ন জেলাগুলো যে পরিমাণে বৃষ্টি পেয়েছে, তার মধ্যে সবার উপরে রয়েছে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার নাম। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলোয় মোটের উপরে এখনও পর্যন্ত ‘স্বাভাবিক’ বৃষ্টিই হয়েছে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন।
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গে এ বার ৭ জুনের পরিবর্তে ২৯ মে থেকেই বর্ষা ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু তার পরেও উত্তরের জেলাগুলো এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিই পেয়েছে।
তবে সামনের সাত দিনের মধ্যে দু’দিন উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির (৭ থেকে ১১ সেমি) হলুদ সতর্কতা এবং একদিন অতিভারী বৃষ্টির (৭ থেকে ২০ সেমি) কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।