• খাবারের টাকা শোধ করতে পারেনি খরিদ্দার, কান কামড়ে ছিঁড়ে নিল দোকানদার
    আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুরগির খাবার নিয়ে সেই টাকা শোধ করতে না পারায় খরিদ্দারের কান কামড়ে ছিঁড়ে নিল দোকানদার। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের স্বরূপকাঠি গ্রামে। যদিও খরিদ্দার এবং দোকানদার দু'জন পরস্পরের বন্ধু বলেই জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আপাতত হিমাদ্রি বর্মন নামে আহত ওই যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। অভিযুক্ত গোবিন্দ মণ্ডলকে আটক করে স্থানীয়রা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। 

    জানা গিয়েছে, সম্পর্কে দুই বন্ধু গোবিন্দ এবং হিমাদ্রির ওই এলাকায় আলাদা আলাদা পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা ব্যবসা করে আসছেন। এর আগেও বেশ কয়েকবার গোবিন্দর থেকে মুরগির খাবার নিয়েছেন হিমাদ্রি। ফলে তাঁদের মধ্যে ব্যবসায়ীক যোগাযোগটাও বেশ পুরনো। স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি হিমাদ্রি গোবিন্দর থেকে তাঁর ফার্মের মুরগিদের জন্য খাবার নেয়। যে টাকা তিনি পরিশোধ করতে পারেননি বলেই জানা যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হিঙ্গলগঞ্জের স্বরূপকাঠি বাজারে দু'জনের মধ্যে দেখা হয়। গোবিন্দ হিমাদ্রির থেকে পাওনা টাকা দাবি করে। এই নিয়ে প্রথমে সাধারণ কথাবার্তা শুরু হলেও একটু পরেই লেগে যায় তীব্র বচসা।‌ সেখান থেকে শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। বাজারের মধ্যেই চলতে থাকে এই গোলমাল। অভিযোগ, মারামারি চলার সময় আচমকাই গোবিন্দ হিমাদ্রির কানে কামড় দিয়ে বসে। হিমাদ্রির আর্ত চিৎকারে সবাই ছুটে এলে দেখা যায় গোটা কান শরীর থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছে। 

    এই কাণ্ড দেখে হতবাক হয়ে যান বাজারের লোকজন। দ্রুত হিমাদ্রিকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একজন চিকিৎসকের কাছে। সেখান থেকে ওই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে হিঙ্গলগঞ্জের সান্ডেলবিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে ঘটনার কথা জানতে পেরে হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশ অভিযুক্ত গোবিন্দ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে। শুক্রবার তাকে বসিরহাট আদালতে পেশ করা হবে। সেইসঙ্গে হিমাদ্রির অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আপাতত সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন বলে জানা গিয়েছে। 

    ঘটনার পর যখন গোবিন্দকে জিজ্ঞাসা করা হয় সে এই কাজ কেন করেছে তখন গোবিন্দর উত্তর, দীর্ঘদিন ধরেই হিমাদ্রির কাছে মুরগির খাবার বাবদ ২০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে তার। তার দাবি, গত কয়েকমাস ধরে সে বারবার হিমাদ্রিকে অনুরোধ করছিল পাওনা টাকা যেন হিমাদ্রি তাকে দিয়ে দেয়। কিন্তু হিমাদ্রি তাকে আজ দেব বা কাল দেব বলে দিনের পর দিন ঘুরিয়ে আসছিল। বৃহস্পতিবার বাজারে যখন হিমাদ্রির কাছে টাকা চাওয়ায় পর যখন হিমাদ্রি ফের তাকে পরে দেওয়ার কথা জানায় তখনই তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় বলে গোবিন্দর দাবি। তার কথায়, টাকা দিতে অস্বীকার করায় প্রথমে বচসা এবং সেখান থেকে হাতাহাতির জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। 

    অন্যদিকে হিমাদ্রির দাবি, তাঁর বন্ধু গোবিন্দ তাঁর কাছ থেকে কিছু টাকা পেত। সেই টাকা তিনি ধাপে ধাপে পরিশোধ করেও আসছিলেন বলে দাবি করেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে গোবিন্দ তাঁকে পরিকল্পিতভাবে খুন করার চেষ্টা করে বলে হিমাদ্রির অভিযোগ। হিমাদ্রির কথায়, 'ভরা বাজারে আমায় বেধরক মারধর করার পর আমার কান কামড়ে ছিঁড়ে নেওয়া হয়।' ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সুভাষচন্দ্র গাইন জানিয়েছেন, 'বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ গোবিন্দ মণ্ডল ও হিমাদ্রি বর্মণের মধ্যে বাজারে প্রথমে বচসা এবং সেখান থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। এরপরেই আচমকা চিৎকার শুনে গিয়ে দেখা যায় গোবিন্দ হিমাদ্রির কান কামড়ে ছিঁড়ে নিয়েছে। ঘটনার পর হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে গোবিন্দকে ধরে নিয়ে যায়।
  • Link to this news (আজকাল)