• মেট্রো টাইমের কোনও ঠিক নেই, চরমে যাত্রী ভোগান্তি, এরকম আর কতদিন চলবে?
    আজ তক | ১১ আগস্ট ২০২৫
  • সোমবার সকাল থেকেই বিপর্যস্ত কলকাতা মেট্রো পরিষেবা। নোয়াপাড়া মেট্রো স্টেশনে হঠাৎ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে প্রায় ৪০ মিনিট বন্ধ ছিল শহিদ ক্ষুদিরামমুখী মেট্রো চলাচল। অফিসের সময়ে এই বিঘ্নে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছয়। দমদম থেকে আপ লাইনের চলাচলও হয়ে পড়ে অনিয়মিত, ফলে প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে যাত্রী চাপ বাড়তে থাকে। অনেকে বিকল্প পরিবহনের খোঁজে ছুটে পড়েন, যার প্রভাব পড়ে ট্র্যাফিকেও।

    এই বিশৃঙ্খলার বড় কারণ কবি সুভাষ (নিউ গড়িয়া) স্টেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকা। স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম পিলারে ফাটল ধরা পড়ার পর ২৮ জুলাই থেকে বাণিজ্যিক পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। এরপর শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনকে নতুন দক্ষিণ টার্মিনাল করা হয়। কিন্তু এখানে ক্রসওভার পয়েন্টের পরিবর্তনের কারণে ট্রেনগুলির ট্র্যাক বদলানোর প্রক্রিয়া দীর্ঘ হচ্ছে। ফলে একটি ট্রেন ট্র্যাক পরিবর্তন না করা পর্যন্ত পিছনের ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে পারছে না, তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ লাইন।

    এর আগে কবি সুভাষে যাত্রী নামিয়ে ট্রেন প্ল্যাটফর্মের দক্ষিণে কারশেডের কাছে ট্র্যাক বদল করত এবং তারপর উত্তরমুখী যাত্রা শুরু করত। এতে পিছনের ট্রেন সহজেই স্টেশনে ঢুকতে পারত। কিন্তু এখন এই ব্যবস্থা নেই, ফলে প্রতিটি ট্রেনকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে এবং গোটা পরিষেবাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

    যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, ট্রেন প্রায়ই স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক দেরিতে চলছে। এক যাত্রী জানান, চাঁদনি চক থেকে কবি নজরুল পৌঁছাতে প্রায় ২০ মিনিট বেশি সময় লেগেছে, মাঝে গীতাঞ্জলি স্টেশনে ১০ মিনিট আটকে থাকতে হয়েছে। আরেক যাত্রী বলেন, প্ল্যাটফর্মের ডিসপ্লে-তে যে সময় দেখানো হচ্ছে, বাস্তবে ট্রেনের আসা-যাওয়ার সঙ্গে কোনও মিল নেই।

    মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য শহিদ ক্ষুদিরামে নতুন ক্রসওভার পয়েন্ট তৈরি করা হচ্ছে। এতে সিগন্যালিং, বৈদ্যুতিক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ দরকার হবে, যা সম্পূর্ণ করতে প্রায় এক মাস সময় লাগতে পারে। পাশাপাশি একটি অন্তর্বর্তী সমাধানের পরিকল্পনাও রয়েছে। এর আওতায় কিছু নিউ গড়িয়ামুখী ট্রেন মহানায়ক উত্তম কুমার (টালিগঞ্জ) থেকে ট্র্যাক বদলে উত্তরমুখী হবে, বাকিগুলি যাবে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত।

    যাত্রীদের মতে, উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো একসময় নির্ভরযোগ্যতার প্রতীক ছিল। কিন্তু কবি সুভাষ স্টেশন বন্ধ হওয়ার পর থেকে সেই চিত্র বদলে গিয়েছে। মেট্রো কত দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে, এখন তা-ই দেখার।

     
  • Link to this news (আজ তক)