গঙ্গাসাগরকে ‘জাতীয় মেলা’র স্বীকৃতি দিতে নারাজ কেন্দ্র
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৯ আগস্ট ২০২৫
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নানা সময় গঙ্গাসাগর মেলাকে ‘জাতীয় মেলা’র তকমা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রের কাছে। সোমবার লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ বাপি হালদারের এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্র সরকার জানিয়ে দিল গঙ্গাসাগর মেলাকে ‘জাতীয় মেলা’ স্বীকৃতি দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের।
বাপি হালদার সংসদে এক লিখিত প্রশ্নে জানতে চেয়েছিলেন, গঙ্গাসাগর মেলাকে ‘জাতীয় মেলা’র স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে কী ভাবছে কেন্দ্র? এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত জানিয়েছেন, ‘এমন কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের।’ সাংসদ বাপি হালদার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ক্ষোভ উগরে কেন্দ্রকে ‘বাংলা-বিরোধী’ বলে তোপ দেগেছেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ১৫ জানুয়ারি শেষ হয়েছিল এবারের গঙ্গাসাগর মেলা। এবার মোক্ষলাভের আশায় গঙ্গাসাগরে ১ কোটি ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী স্নান করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মুহূর্তে নজরদারি ও নির্দেশমতো বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রী, জেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। এ বছর সাগরদ্বীপের রাস্তায় ১০০টি সৌরবিদ্যুৎ চালিত আলোর ব্যবস্থা করা হয়। মেলা প্রাঙ্গণ দূষণমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখতে চারটি প্লাস্টিক বোতল কাটার মেশিনও বসানো হয়েছিল। সমুদ্রতট পরিষ্কার রাখতে ৩ হাজারেরও বেশি সৈকতপ্রহরী নিযুক্ত করা হয়েছিল।
এরা আগে কুম্ভমেলার সঙ্গে তুলনা করে একাধিক বার গঙ্গাসাগরকে ‘জাতীয় মেলা’ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে অনেকবার সংসদে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদেরাও। তাঁদের অভিযোগ, ‘কেন্দ্রের বিমাতৃ সুলভ আচরণের জেরেই উপেক্ষিত গঙ্গাসাগর।’ অথচ প্রতিবছর এই মেলায় ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ সাধু-সন্ত ও ভক্তরা। গঙ্গাসাগর মেলার পৌরাণিক, ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। তারপরও কেন্দ্রের এই বঞ্চনা আসলে বাংলার প্রতি বঞ্চনার এক জ্বলন্ত উদাহরণ বলে অভিযোগ তুলছে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদরা।