নারায়ণ সিংহ রায়: কার্শিয়ংয়ের ডাউহিলের হোম স্টে-তে বছর ২৩-এর যুবক স্বপ্তনীল চ্যাটার্জির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য৷ ইতিমধ্যেই বাকি পড়ুয়াদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসবাদ করছে কার্শিয়ং পুলিস। নথিভুক্ত করা হচ্ছে তাঁদের বয়ান৷ পুলিস সূত্রে খবর, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাকি পড়ুয়াদের শৈলশহর ছাড়ার কোনও অনুমতি নেই।
ওদিকে পড়ুয়া পর্যটকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে ২৩ বছরের স্বপ্তনীল চ্যাটার্জির পরিবার। হাওড়া থেকে কার্শিয়ংয়ে এসে উপস্থিত হয়েছে স্বপ্তনীলের পরিবার। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে চলছে ময়নাতদন্ত। পরিবার সূত্রে খবর, স্বপ্তনীলের কার্শিয়ং ভ্রমণের কথা জানতই না তাঁর পরিবার৷ সোমবার ভোরে বন্ধুদের ফোনে এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর পান তাঁর পরিবার।
স্বপ্তনীলের বাবার বক্তব্য...
পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে। স্বপ্তনীলের বাবা ইন্দ্রনীল চ্যাটার্জি জানান, "কী করে কী হল কিছুই বুঝতে পারছি না। পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷" মৃত পড়ুয়া সপ্তনীলের মায়ের দাবি, ছেলে যে কার্শিয়ংয়ে গিয়েছে, তা বাড়ির লোক জানত-ই না। ভোর ৫টা নাগাদ ছেলের বন্ধুর কাছ থেকে ফোন আসে। ফোনে বলা হয় যে, সপ্তনীলের দুর্ঘটনা ঘটেছে, আপনারা তাড়াতাড়ি আসুন।
ম্যাজিস্ট্রেট বলেন...
অন্যদিকে এই ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বজিৎ দাস বলেন , "পুলিসের কাছ থেকে রিকুইজিশন পেয়েই ময়নাতদন্তে উপস্থিত হয়েছি৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই বোঝা যাবে আসল ঘটনা কী!" সোমবার ভোরে হোম স্টে-র বাইরে পড়ে থাকতে দেখা যায় স্বপ্তনীলকে। হইচই পড়ে যায় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। হোম স্টে কর্তৃপক্ষ ও বন্ধুরা মিলে স্বপ্তনীলকে প্রথমে কার্শিয়ং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ধন্দে পুলিসও!
ঘটনাটি কীভাবে ঘটল তা নিয়ে ধন্দে পুলিসও। হোম স্টে-র সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ ঘিরেও প্রশ্ন রয়েছে! পুলিস সুত্রে খবর, সিসিটিভি ফুটেজে স্বপ্তনীলকে ছাদ থেকে পড়ে যেতে দেখা যায়! কিন্তু এটা কি নিছকই শুধু পড়ে যাওয়া না কি এর পিছনে অন্য কোনও গল্প রয়েছে? কেউ কি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ওই পড়ুয়াকে? তদন্তে সবদিকই খতিয়ে দেখছে পুলিস।
৪ বান্ধবী ও ২ বন্ধু মিলে বেড়াতে...
কলকাতা থেকে ৪ বান্ধবী ও ২ বন্ধু মিলে বেড়াতে বেরিয়েছিল। মৃত সপ্তনীল চ্যাটার্জি কলকাতার হেরিটেজ কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সের পড়ুয়া ছিলেন। কিন্তু বাকি বন্ধু-বান্ধবীরা সবাই যাদবপুরের পড়ুয়া। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ৬ বন্ধু-বান্ধবীদের মধ্যে একজনের বাড়ি জলপাইগুড়িতেই। ৬ বন্ধু-বান্ধবী প্রথমে জলপাইগুড়িতে সেই বন্ধুর বাড়িতেই উঠেছিল। সেখানে একদিন কাটিয়ে, তারপর সেখান থেকে কার্শিয়ংয়ে পৌঁছয়। ডাউহিলের হোম স্টে-তে ওঠে সবাই মিলে। সোমবার ছিল ফেরার কথা। সোমবার ফেরার দিন ভোরেই এই ঘটনা! এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শৈলশহরে।