দেব গোস্বামী, বোলপুর: রাত পোহালেই কৌশিকী অমাবস্যা। পূণ্যার্থীদের ঢল তারাপীঠে। বাংলা তো বটেই, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও বহু মানুষ ভিড় জমান মন্দিরে। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, এবার চার থেকে পাঁচ লক্ষ পূণ্যার্থী তারাপীঠ মন্দিরে আসবেন। ফলে পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখছে না জেলা পুলিশ প্রশাসন। ইতিমধ্যে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ এবং তারাপীঠ মন্দির কমিটির সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক সেরেছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তারাপীঠ মন্দির চত্বর জুড়ে থাকছে ১৫০ টিরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা।
মন্দিরের প্রবেশ পথগুলিতে বসানো হয়ছে মেটাল ডিটেক্টর। পাশাপাশি যে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশের ৫০০ আধিকারিক সহ ১৫০০ জন পুলিশকর্মী। থাকছে ২০০০ সিভিক পুলিশও। তারাপীঠের বিভিন্ন এলাকায় তৈরি করা হয়েছে একাধিক অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার। সেখান থেকে চলবে কড়া নজরদারি। যান নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন জায়গায় তৈরি করা হয়েছে ড্রপগেট। মন্দিরের ভিড় নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ। সেজন্য পুলিশের পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে ২০০ জন বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীকেও মোতায়েন করা হয়েছে।
গর্ভগৃহে প্রবেশের জন্য মন্দির জুড়ে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী বাঁশের ব্যারিকেড। তৈরি রাখা হয়েছে দমকলকেও। যে কোনও পরিস্থিতিতে দমকল যাতে দ্রুত পৌঁছতে পারে সেজন্য আগাম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ”এই বছর প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষেরও বেশি পুণ্যার্থী তারাপীঠ মন্দিরে আসবেন। সে কথা মাথায় রেখেই সবরকম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।” অন্যদিকে তারাপীঠের বিভিন্ন হোটেলগুলিতে অতিরিক্ত ঘর ভাড়া চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ সামনে আসছে।
যদিও এক্ষেত্রে সতর্ক জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই তারাপীঠের হোটেল এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বীরভূম জেলা প্রশাসন বৈঠক করেছে। কোনও ভাবেই পর্যটকদের কাছে অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া চাওয়া না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এমনকী এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন পর্যটকরাও। জানা গিয়েছে, কোনও হোটেল মালিক অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেন তাহলে সংশ্লিষ্ট পর্যটক পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন। বলে রাখা প্রয়োজন, শুক্রবারই ভাদ্র মাসের কৌশিকী অমাবস্যা। ভক্তদের বিশ্বাস, এই সময় মা তারার কাছে কোনও মনস্কামনা করলে তা বিফলে যায় না। আর সেই বিশ্বাস থেকেই মন্দিরে ভিড় জমান ভক্তরা।