দিনবদলের সম্ভাবনা নেই, নির্দিষ্ট সূচি মেনেই হবে SSC শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা
প্রতিদিন | ২৩ আগস্ট ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নির্দিষ্ট দিনেই হবে। দিন বদলের আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ৭ সেপ্টেম্বর নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নেবে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ১৪ সেপ্টেম্বর হবে একাদশ ও দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা। ৫ লক্ষ ৮০ হাজার প্রার্থী দু’দিনের পরীক্ষায় অংশ নিতে চলেছেন।
সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার মৌখিক নির্দেশে জানিয়েছিল, চাইলে এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে পারে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সম্ভব নয় বলেই মনে করছে রাজ্য। কারণ, আদালতের নির্দেশেই চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিজের নিজের স্কুলে কর্মরত রয়েছেন চিহ্নিত অযোগ্য বাদে অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। সেক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরের নির্দিষ্ট দিনে পরীক্ষা না নিলে বেশ কিছু বাস্তব সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেই মনে করছে শিক্ষা মহল। কারণ, সেপ্টেম্বরের শেষে দুর্গাপুজো। পুজোর ছুটি পড়ে যাবে। তারপর শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ে ফল বের করে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে কয়েক মাস সময় লেগে যাবে। যেহেতু আদালত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিতে বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছিল, তাই সেই সময়সীমার মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে চায় কমিশন। না হলে স্কুলে স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সঙ্কট দেখা দেবে।
তাই আপাতত পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন কমিশনের কর্তারাও। শুক্রবার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে নবান্নে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কড়া নিরাপত্তায় পরীক্ষা নির্বিঘ্নে করতে বৈঠকে উপস্থিত জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের একগুচ্ছ নির্দেশ দেওয়া হয়। নবান্নের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রত্যেক জেলায় একজন অতিরিক্ত জেলাশাসক পদমর্যাদার আধিকারিক জেলার পুরো পরীক্ষার তত্ত্বাবধানে থাকবেন। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকবেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট র্যাঙ্কের সরকারি আধিকারিক। তাঁর দায়িত্বেই নজরদারি চলবে।
নবান্ন সূত্রে খবর, পরীক্ষা ব্যবস্থাকে কয়েকটি পর্যায়ে ভাগ করে প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে বাড়তি নজর দিতে বলা হয়েছে। কড়া নিরাপত্তায় এই পরীক্ষা নিতে চায় কমিশন। তার জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশি ব্যবস্থা তৈরি রাখা হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে যখন প্রশ্নপত্র যাবে সেই সময় একজন করে সরকারি আধিকারিককে থাকতে হবে। এছাড়াও নির্দেশে বলা হয়েছে, পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে প্রতিটি কেন্দ্রে ফ্রিস্কিং বা শারীরিক তল্লাশি চালাতে হবে। কোন কেন্দ্রে কেমনভাবে ফ্রিস্কিং হবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ প্রশাসন। প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি বাধ্যতামূলক করতে হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিষিদ্ধ।
মোবাইল নিয়ে কোনও পরীক্ষার্থী ধরা পড়লে তাঁর পরীক্ষা বাতিল করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, দুই পরীক্ষার দিনেই পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা রাখতে হবে। রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে চালু থাকে, তার জন্য রাজ্যের তরফে রেলকে জানানো হবে। বন্যা বা প্রবল বৃষ্টি হলে পরীক্ষা কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় যাতে জল না জমে, তা নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আগে থেকেই জেলাশাসকদের নিতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনও পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে সমস্যা হলে জেলাশাসকরা সরাসরি এসএসসি-র সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।