আরও এস ৪০০ আসবে রাশিয়া থেকে! আগামী বছর সরবরাহ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে, দাবি সূত্রের...
আজকাল | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংঘাতের সময় ভারতের জন্য এক দুর্ভেদ্য ঢাল হিসেবে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস ৪০০ আবির্ভূত হয়েছিল। প্রতিবেশী দেশের সব আক্রমণ সফল ভাবে প্রতিহত করেছিল ‘সুদর্শন চক্র’। এর ঠিক কয়েক মাস পর, রাশিয়া আরও এস ৪০০ ইউনিট ভারতে সরবরাহ শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার সরবরাহ ত্বরান্বিত করার জন্য আলোচনা চলছে দুই দেশের মধ্যে।
সূত্রের দাবি, একটি ইউনিট ২০২৬ সালের মধ্যে এবং আরও একটি ২০২৭ সালের মধ্যে সরবরাহ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারত ২০১৮ সালে পাঁচটি এস ৪০০-এর বরাত দিয়েছিল রাশিয়াকে। সেই বরাতের অবশিষ্ট দু’টি ইউনিট এগুলি। গত বছর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের রাশিয়া সফরের সময় এবং সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সরবরাহে বিলম্বের বিষয়টি তুলে ধার হয়েছিল।
এই দু’টি ছাড়াও, ভারত আরও এস ৪০০ সিস্টেম কেনার পরিকল্পনা করছে যা তার উচ্চাভিলাষী ‘সুদর্শন চক্র’ প্রকল্পের অগ্রগতিতে সহায়তা করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে উল্লেখিত বহুস্তরীয় কাঠামোটি দেশের উপর একটি প্রতিরক্ষামূলক আস্তরণ প্রদানের জন্য উন্নত নজরদারি এবং সাইবার সুরক্ষাকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসবে এবং এটি ইসরায়েলের আয়রন ডোমের মতো হবে।
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার ‘ফেডারেল সার্ভিস ফর মিলিটারি-টেকনিক্যাল কোঅপারেশন’-এর প্রধান দিমিত্রি শুগায়েভ জানিয়েছেন, এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা আরও বেশি কেনার ব্যাপারে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। ২০২৬ এবং ২০২৭ সালে আরও দুই ইউনিট এস-৪০০ সরবরাহ করতে পারে রাশিয়া।
এস-৪০০ ভারতীয় বাহিনীর জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ। যাকে অপারেশন সিঁদুরের সময় ‘গেম-চেঞ্জার’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন বিমানবাহিনী প্রধান এপি সিং। মে মাসে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের পর ভারতকে লক্ষ্য করে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা সত্ত্বেও পাকিস্তান ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ভেদ করতে পারেনি।
এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ৬০০ কিলোমিটার পর্যন্ত শত্রুর কার্যকলাপ শনাক্ত করতে পারে এবং একই সঙ্গে ১০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তু ট্র্যাক করতে পারে। ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ফায়ারিং রেঞ্জের সঙ্গে, এটি বোমারু বিমান, যুদ্ধবিমান, ড্রোন, প্রাথমিক সতর্কতা বিমান এবং এমনকি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে পারে। এস-৪০০ সিস্টেমের প্রতিটি রেজিমেন্ট বা ইউনিট আটটি লঞ্চ যান দিয়ে সজ্জিত, প্রতিটিতে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র টিউব রয়েছে।
পাকিস্তান ও চীনের হুমকি মোকাবেলা করার জন্য ভারত ২০১৮ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ কিনেছিল। ৩৯,০০০ কোটি টাকার চুক্তিতে পাঁচটি এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ দূরপাল্লার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু সরবরাহ একাধিকবার বিলম্বিত হয়েছে। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে তিনটি এস-৪০০ ইউনিট ভারতে এসে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। বাকি দু’টির অপেক্ষা। এই তিনটি ইউনিট আদমপুর (পাঞ্জাব), পূর্ব সেক্টর এবং পশ্চিম সেক্টরে মোতায়েন করা হয়েছে।
এস-৪০০ ভারত-রাশিয়া সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। যা চীনে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিয়ানজিনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় দুই দেশের নেতারা সৌহার্দ্য দেখিয়েছিলেন। অন্যদিকে, রাশিয়াও মস্কো থেকে তেল কেনা বন্ধ করার মার্কিন দাবির বিরুদ্ধে ভারতের অবাধ্যতার প্রশংসা করেছে।