স্বামীর মুখের গন্ধ শুঁকেই রেগে লাল স্ত্রী, শেষমেশ যা করলেন, দশ দিন পর ফাঁস হতেই শিউরে উঠলেন আত্মীয়রা
আজকাল | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: নিত্যদিন মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরতেন স্বামী। এলাকার বহু মহিলার সঙ্গেও ছিল ঘনিষ্ঠতা। স্বামীর আচরণে রীতিমতো জেরবার ছিলেন স্ত্রী। মত্ত অবস্থায় স্বামীর আচরণ আর সহ্য করতে না পেরে, চরম পদক্ষেপ করলেন তিনি। ফাঁকা বাড়িতে স্বামীকে খুন করে, মাটির তলায় পুঁতে রাখলেন। দশদিন পর অবশেষে ঘাতক স্ত্রীর কীর্তি ফাঁস।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দাম্পত্য কলহের জেরে মদ্যপ স্বামীকে পিটিয়ে খুন করেন তাঁর স্ত্রী। এরপর বাড়িতেই দেহটি মাটির তলায় পুঁতে রাখেন দশদিন। অবশেষে দেহটি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, তুন্ডি থানার অন্তর্গত তিলাইয়াতান গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। শনিবার দেহটি উদ্ধার করে শহিদ নির্মল মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ আধিকারিক উমা শঙ্কর জানিয়েছেন, মৃত যুবকের নাম সুরেশ হাঁসদা। ৪৫ বছর বয়সি যুবককে খুন করেন তাঁর স্ত্রী ৪২ বছরের সূর্যি মাঝিয়া।
দিন কয়েক আগেই সুরেশের কাকা মার যান। আত্মীয়রা শেষকৃত্য উপস্থিত হয়ে সুরেশের খোঁজ করেন। কিন্তু কোথাও তাঁকে খু্ঁজে না পাওয়ায় সকলের সন্দেহ হয়। পাশাপাশি সুরেশের বাড়ি থেকেও পচা দুর্গন্ধ পেয়েই সকলের সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। তড়িঘড়ি করে সুরেশের আত্মীয়রা পুলিশে খবর দেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্ত্রী সুরেশের নিখোঁজের নেপথ্যে নানা কারণ বলছিলেন। দীর্ঘ জেরায় অবশেষে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বামীকে খুনের ঘটনাটিও স্বীকার করে নেন। সেই সময়েই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশি জেরা ঘাতক স্ত্রী জানান, সুরেশের মদ্যপানের কারণে নিত্যদিন সংসারে অশান্তি হত। পাশাপাশি একাধিক মহিলার সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা ছিল তাঁর। স্বামীর আচরণে জেরবার হয়ে রাগের মাথায় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে স্বামীকে খুন করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সূর্যি জানিয়েছেন তিনি স্বামীকে দশদিন আগে খুন করেছেন। কিন্তু আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের দাবি, দশদিন আগেই সুরেশের খুন হয়। দেহ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে কীভাবে, কবে তাঁকে খুন করা হয়েছিল। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে আরও একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল ঝাড়খণ্ডে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের সেরাইকেলা- খারসওয়ান জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীর সঙ্গে নিত্যদিন অশান্তি হত স্ত্রীর। সেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে ঘিরে স্বামীকে কুপিয়ে খুন করেন ২৯ বছরের তরুণী।
জানা গেছে, অভিযুক্ত তরুণীর নাম, পূজা কুমারী। গত ১৫ জুলাই রাতে পাশাপাশি স্বামী, স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুমন্ত অবস্থাতেই রাজেশ কুমার মাহতা নামের যুবকের উপর কুড়ুল নিয়ে হামলা করেন পূজা। ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামীকে একাধিকবার কুড়ুল দিয়ে কোপ মারেন। রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানাতেই রাজেশ কুমার মাহতার মৃত্যু হয়।
পুলিশ আধিকারিক কুমার লুনায়েত জানিয়েছেন, স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা আগেই করেছিলেন পূজা। তবে সঠিক সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। ঘটনার দিন সন্তানদের অন্য ঘরে ঘুম পাড়িয়ে এসেছিলেন তিনি। রাজেশ খাওয়াদাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। গভীর রাতে কুড়ুল নিয়ে রাজেশকে কোপ মারেন।
রাজেশ মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত হতেই ঘরের দরজা পিছন থেকে বন্ধ করে বেরিয়ে যান পূজা। এরপর তিন সন্তানকে ঘুম থেকে তুলে তিনি পালিয়ে যান। পরদিন সকাল থেকে গত কয়েকদিনে প্রতিবেশীরা তাঁদের কোনও সাড়াশব্দ পাননি। তাতেই সন্দেহ হয়। পুলিশে খবর দেন তাঁরা। রবিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। বাড়ির দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় রাজেশের পচাগলা দেহ।
ঘরের মধ্যেই ছিল রক্ত মাখা কুড়ুলটি। ঘরের ছন্নছাড়া অবস্থা দেখেই পুলিশের সন্দেহ হয়। এদিকে প্রতিবেশীরা জানান, সন্তানদের নিয়ে স্ত্রী পূজা পলাতক। খুনের সন্দেহ হতেই পুলিশ পূজার খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। অবশেষে আটক করে তাঁকে। দীর্ঘ পুলিশি জেরায় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কাঁদতে কাঁদতেই জানান, স্বামীকে তিনি খুন করেছেন।
পূজা আরও জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী, রাজেশ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। অন্য এক তরুণীর সঙ্গে দিনের পর দিন কথা বলতেন ফোনে। প্রথমে সন্দেহ হলেও, পরে জানতে পারেন, সেই তরুণীর সঙ্গেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত স্বামী। অবশেষে তিনি খুনের পরিকল্পনা করেন। পূজাকে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে তারা। ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। পাশাপাশি খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি এবং রক্তের দাগ লাগা দু'টি স্মার্টফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।