• পুলিশের কানে কানে গোপন কথা, তারপরেই ছাড়া পেল নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত! মোদির রাজ্যে পুলিশের কীর্তিতে ক্ষিপ্ত জনতা ...
    আজকাল | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এক যুবককে। থানায় পৌঁছনোর কিছুক্ষণ পরেই ছেড়ে দেওয়া হল অভিযুক্তকে! তাও আবার পুলিশের সঙ্গে অভিযুক্ত কিছুক্ষণ একান্তে কথা বলার পরেই! জেল থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে বেরিয়ে যেতেও দেখা গেল অভিযুক্ত যুবককে। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের আনন্দ জেলায়। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে জেলের বাইরেই কথা বলছেন কয়েকজন পুলিশ। পুলিশের কানে কানে কথা বলেন অভিযুক্ত যুবক। পরনে ছিল সাদা রঙের টি শার্ট। তখন তাঁকে সুস্থ, স্বাভাবিক মনে হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এরপর তাঁকে এক পুলিশ জেল হেফাজতে নিয়ে যায়। সেখানে ঢুকেই পুলিশ অভিযুক্ত যুবকের কানে কিছু কথা বলে। তারপর জেল থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় তাঁকে। 

    তখনই দেখা গেছে, পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে অভিযুক্ত যুবক খোঁড়াতে খোঁড়াতে থানা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত যুবকের গোপন কথাবার্তার পরেই জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার ঘটনায় রাগে, ক্ষোভে ফুঁসছেন সাধারণ মানুষ। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দিন কয়েক আগেই আনন্দ জেলায় পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুন করেন এই যুবক। এরপর মৃতদেহটি ভদোদরায় মিনি নদীতে ছুড়ে ফেলেন। নাবালিকার পরিবারের এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। তিনি বিবাহিত বলেও জানা গেছে। পুলিশি জেরায় ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাটি তিনি স্বীকার করে নেন। এমনকী গ্রামের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, নাবালিকাকে মোটরবাইকে করে ঘুরছেন ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি। 

    গ্রামবাসীদের দাবি, ওই নাবালিকাকে উপর তুকতাক করেছিলেন অভিযুক্ত। তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ছেলে সন্তানের কামনায় ওই নাবালিকার উপর তুকতাক করেন। যদিও পুলিশ এই দাবি উড়িয়েও দিয়েছে। 

    প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ আগেই গুজরাটের ভদোদরায় আরও একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, নভোপুরা থানায় শ্বশুর ও দেওরের বিরুদ্ধে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছেন তরুণী। এমনকী তাঁদের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করেছেন তিনি। পাশাপাশি অভিযোগ জানিয়েছেন নিজের স্বামীর বিরুদ্ধেও। তরুণীর অভিযোগ, শ্বশুর ও দেওরের কেচ্ছা যাতে ফাঁস না করা হয়, তার জন্য রোজ ব্ল্যাকমেল করতেন স্বামী। এমনকী তাঁর অশালীন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। 

    তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শ্বশুরবাড়িতে পা রাখার পর থেকে অশান্তি শুরু হয়। শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা দ্রুত তাঁকে সন্তানধারণের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেন। শ্বশুরবাড়ির সকলের বক্তব্য ছিল, তাঁর বয়স বেড়েছে। তাই সন্তানধারণের জন্য হয়তো অক্ষম। তাই আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানধারণের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এরপরেই দম্পতির মেডিক্যাল টেস্ট হয়। পরীক্ষায় জানা যায়, স্বামীর শুক্রাণুর সংখ্যা অত্যন্ত কম। তাই সাধারণভাবে সঙ্গমের মাধ্যমে সন্তানধারণ সম্ভব নয়। আইভিএফ পদ্ধতিতেও সন্তানধারণ করা সম্ভব নয়। 

    এরপরই তরুণী প্রস্তাব দেন, তিনি সন্তান দত্তক নিতে চান। কিন্তু তাতে আপত্তি ছিল শ্বশুরবাড়ির সকল সদস্যের। নির্যাতিতার অভিযোগ, ২০২৪ সালে জুলাই মাসে তিনি ঘরেই ঘুমিয়ে ছিলেন। আচমকা ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন শ্বশুর। সেদিনই প্রথম শ্বশুর ধর্ষণ করেন পুত্রবধূকে। চিৎকার করলেও কেউ ছুটে এসে রক্ষা করেননি। বরং বারবার চড়, থাপ্পড় মারতে থাকেন বধূকে। 

    তরুণী আরও জানিয়েছেন, ঘটনাটি স্বামীকে জানিয়েও লাভ হয়নি। উল্টে তাঁকে মুখে কুলুপ এঁটে থাকার হুমকি দিয়েছিলেন স্বামী। এও জানিয়েছিলেন, এই ঘটনাটির বিষয়ে বাইরে জানালে তাঁর নগ্ন ছবি সমাজমাধ্যমে ফাঁস করে দেবেন। এরপরেও শ্বশুর তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। কিন্তু তারপরেও তরুণী গর্ভবতী হননি। 

    যৌন নির্যাতন আরও বেড়ে যায় গত বছরের ডিসেম্বর মাস নাগাদ। শ্বশুরের মতোই বিবাহিত দেওর চুপিসারে ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করেন বউদিকে। এরপর একাধিকবার দেওর তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেছেন তরুণী। শেষমেশ চলতি বছরে জুন মাসে তরুণী গর্ভবতী হন। কিন্তু আগস্ট মাসে গর্ভপাত হয়। এরপরই আরও নির্যাতন শুরু হয়। 

    গত জুলাই মাসেই পুলিশকে ধর্ষণের বিষয়টি জানিয়েছিলেন তরুণী। শ্বশুর, দেওর ও স্বামীর কেচ্ছা তখনই ফাঁস করেছিলেন তিনি। প্রাথমিক তদন্তে নেমে রবিবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)