• আরও উন্নত বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ অ্যান্ড্রোথ পেল ভারতীয় নৌসেনা, হস্তান্তর করল কলকাতা গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স...
    আজকাল | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের সামুদ্রিক প্রতিরক্ষার ইতিহাসে নতুন মাইলফলক রচনা করল গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (জিআরএসই) লিমিটেড। ১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার জিআরএসই ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিল আধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত অগভীর জলের সাবমেরিন-বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ অ্যান্ড্রোথ (Androth)। এটি আটটি এএসডব্লিউ এসডব্লিউসি (Anti-Submarine Warfare Shallow Water Craft)-এর সিরিজের দ্বিতীয় জাহাজ।

    মাত্র চার মাসের ব্যবধানেই ভারতীয় সেনাকে হস্তান্তর

    এর আগে ২০২৫ সালের ৮ মে জিআরএসই প্রথম জাহাজ আর্নালা হস্তান্তর করেছিল, যা ১৮ জুন কমিশন করা হয়। মাত্র চার মাসের ব্যবধানেই দ্বিতীয় জাহাজ সরবরাহ করে গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স আবারও তাদের দক্ষতা ও সময়নিষ্ঠতার প্রমাণ দিল। নৌবাহিনীর পক্ষে অ্যান্ড্রোথ গ্রহণ করেন পূর্ব নৌ-সেনা কমান্ডের (ইএনসি) টেকনিক্যাল চিফ অফ স্টাফ রিয়ার অ্যাডমিরাল রাভনিশ শেঠ।

    দেশীয় নৌ-সারফেস গান সহ সজ্জিত এই যুদ্ধজাহাজ

    লাক্ষাদ্বীপ দ্বীপপুঞ্জের অ্যান্ড্রোথ দ্বীপের নামে নামাঙ্কিত এই যুদ্ধজাহাজে রয়েছে দেশীয়ভাবে তৈরি ৩০ মিমি নৌ-সারফেস গান (NSG)। যা জিআরএসই নিজস্বভাবে উৎপাদন করেছে। এ ছাড়াও রয়েছে উন্নত কমব্যাট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, হালকা টর্পেডো ও সাবমেরিন-বিধ্বংসী রকেট। এর ফলে, উপকূলবর্তী অগভীর জলে নজরদারি, অনুসন্ধান ও সাবমেরিন দমন সব ক্ষেত্রেই জাহাজটি হবে কার্যকর।

    এই যুদ্ধজাহাজ আত্মনির্ভরতার প্রতীক

    এই জাহাজ নির্মাণে প্রায় ৮৮ শতাংশ দেশীয় সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে জিআরএসই যে কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তারই প্রমাণ অ্যান্ড্রোথ।

    কী কী বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে এই যুদ্ধ জাহাজের

    অ্যান্ড্রোথ তিনটি মেরিন ডিজেল ইঞ্জিনচালিত ওয়াটার জেটের সাহায্যে উচ্চগতিতে চলাচল করতে পারে। মাত্র ২.৭ মিটার গভীর জলেও এটি সাবলীলভাবে চলতে সক্ষম। ফলে উপকূলবর্তী অগভীর অঞ্চলেও সহজেই সাবমেরিন হুমকি শনাক্ত ও প্রতিরোধ সম্ভব হবে। প্রতিটি জাহাজে থাকবেন ৫৭ জন কর্মী, যার মধ্যে সাতজন কর্মকর্তা।

    জিআরএসই-র ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী কী

    বর্তমানে সংস্থাটি আরও ১৩টি আধুনিক যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করছে। যার মধ্যে রয়েছে দু’টি পি-১৭এ স্টেলথ ফ্রিগেট, ছ’টি এএসডব্লিউ এসডব্লিউসি, একটি বড় জরিপ জাহাজ এবং চারটি নেক্সট জেনারেশন অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল। এর বাইরে ২৬টি জাহাজ নির্মাণাধীন, যার মধ্যে ৯টি বিদেশি বাজারের জন্য। শীঘ্রই পাঁচটি নতুন প্রজন্মের করভেট নির্মাণের বড়সড় চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

    সমুদ্র প্রতিরক্ষায় ভারতীয় নৌসেনার নতুন শক্তি

    বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যান্ড্রোথ নৌবাহিনীর অগভীর জলে সাবমেরিন-বিধ্বংসী ক্ষমতায় গুণগত উন্নতি ঘটাবে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনা সাবমেরিন ও অন্যান্য বহিরাগত শক্তির উপস্থিতি বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এই জাহাজগুলি ভারতের উপকূল সুরক্ষায় আরও দৃঢ় প্রাচীর গড়ে তুলবে।
  • Link to this news (আজকাল)