• কাল সন্ধেয় যেখানে লম্বা লাইন ছিল, আজ সব ধুয়ে মুছে সাফ! একরাতের বৃষ্টিতে ডুবল শহরের পুজো-প্যান্ডেল? দেখুন অবস্থা...
    আজকাল | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। মহালয়ার পর থেকেই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঢল নামছে। শ্রীভূমিতে তো ভিড়ের ঠেলায় অষ্টমী পেরিয়ে গেল কিনা বুঝতেই পারছিলেন না একজন। হাতিবাগান সর্বজনীন আর নবীন পল্লীর মাঝে রাস্তাটুকুতে সোমবার বেশি রাতেও ভিড়, জটলা ছিল। মঙ্গলবার সকাল পেরিয়ে বিকেল। ছবি বদলে গিয়েছে আমূল। সোমবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত যে তুমুল বর্ষণ হয়েছে কলকাতায়, তাতে একপ্রকার তছনছ গোটা শহর। দুপুরের দিকে কিছুটা রোদ উঠলেও, ফের এখন ঝেঁপে বৃষ্টি।

    কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে শহরের পুজো প্যান্ডেলগুলি?

    কাশীবোস লেন-পুজো মণ্ডপে ঢোকার মুখের অংশ, অর্থাৎ কাশীবোস লেন জল থইথই অবস্থা। এদিক ওদিক হেলে গিয়েছে স্টল, দোকান। স্থানীয়রা নিত্যপ্রয়োজনীর জিনিসটুকুও কিনতে যেতে পারছেন না ওই রাস্তা ধরে, বলছেন, ওই গলিপথ ধরে এগোনো সম্ভব নয় কোনওমতেই।

    চোরবাগান সর্বজনীন- মুক্তারামবাবু লেন, এমনিতেই অল্প বৃষ্টিতে জল থইথই অবস্থা হয় সেখানে। প্রবল বর্ষণে গলিপথ অবরুদ্ধ, জল ঢুকে গিয়েছে মণ্ডপের ভিতরে। চিন্তার রেশ পুজো কমিটির প্রত্যুষা ব্যানার্জির গলায়। বললেন, এত বছরের বাসিন্দা, কখনও এমন পরিস্থিতি দেখেননি।

    হাতিবাগান সর্বজনীন- প্যান্ডেলের বাইরের অংশ ঢাকা থাকায় বাঁচোয়া, কিন্তু উত্তরের গলির জল ছাড়েনি প্যান্ডেলের ভিতরের অংশকে। যে প্যান্ডেলের থিম ঘাটের কথা, সেই প্যান্ডেল কার্যত নদীর ঘাটে পরিণত হয়েছে। অতীন ঘোষ মঙ্গলবার পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান। পুজো কমিটির শাশ্বত জানান, জল না নামা পর্যন্ত বুঝতে পারছেন না ক্ষতির পরিমাণ। 

    টালা প্রত্যয়- বৃষ্টি হচ্ছে মুষলধারে। যদিও টালা প্রত্যয় কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, তাতে মণ্ডপের ক্ষতি হয়নি। তবে আজ আর ভিড় হবে না, সেটাও একপ্রকার ক্ষতি বইকি! ভাবনা উদ্যোক্তাদের।

    হাতিবাগান নবীনপল্লী- হুড়মুড়িয়ে প্যান্ডেলের মধ্যে জল ঢুকেছে সোমবার রাত থেকেই। বেলা গড়িয়ে বিকেল হলেও জল নামার কোনও নাম নেই। আকাশের মতোই মুখ ভার উদ্যোক্তাদের। 

    পরিস্থিতি একই শ্রীভূমি থেকে ম্যাডক্স। সর্বত্র হাঁটু, কোমর জল। মাথায় হাত উদ্যোক্তাদের। এখন তাঁরা অপেক্ষা করছেন জল নামার। তাহলেই বুঝতে পারবেন, ক্ষতির পরিমাণ। 

    ব্যাপক ক্ষতি কুমোরটুলিতে। এবারে এমনিতেই বর্ষার কারণে প্রতিমা গড়ায় ব্যাপক বিপত্তি। তারপরেও একেবারে তৈরি প্রতিমা, মণ্ডপে পাঠাবার সময় তুমুল বর্ষণে মাথায় হাত শিল্পীদের। ক্ষতির কথা ভেবে চোখে জল।  

    একটানা ভারী বৃষ্টিতে হাঁটু সমান জল কলেজ স্ট্রিটে। বহু দোকানপাট জলমগ্ন। জল ঢুকেছে বহু ক্যাফে, বিয়ের দোকানে। পুজোর মুখে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হলেন ব্যবসায়ীরা। প্রায় সব দোকানে জল ঢুকে প্রচুর বই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। স্থানীয়দের মতে, আমফানের সময়েও এত ক্ষতি হয়নি। 

    সোমবার রাত্রি থেকে বৃষ্টি শুরু। একনাগাড়ে বৃষ্টি চলছে মঙ্গল সকালেও। কয়েকঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে ডুবেছে শহর। উত্তর, মধ্য, দক্ষিণ কলকাতা একপ্রকার জলের তলায়। জলমগ্ন গোটা সল্টলেক চত্বর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাও। মঙ্গলবার শহরের দিকে তাকালেই দেখা যাচ্ছে, মানিকতলা থেকে মুদিয়ালি, সর্বত্র কোমর জল। ডুবে গিয়েছে রাস্তা-ঘাট। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি, অটো জলের তলায়। লাইনে জল জমে গিয়ে ব্যাহত ট্রেন, মেট্রো চলাচল। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। শহরবাসী মনে করতে পারছেন না, প্রতি বর্ষায় কম বেশি জলযন্ত্রণা হলেও, শেষ কবে এই পরিমাণ বৃষ্টির সাক্ষী থেকেছে শহর

     
  • Link to this news (আজকাল)