যৌনপশুর মতো অত্যাচার করে পালিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্ত, ১৫০০ কিলোমিটার দূর থেকে ধরে আনল পুলিশ...
আজকাল | ০১ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: শহর থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে উত্তরপ্রদেশের মথুরায় আত্মগোপন করেও শেষরক্ষা হল না। মুম্বইয়ের মালাড এলাকায় এক যৌনকর্মীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল এক অটোচালক। মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে মথুরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বরের ওই নৃশংস ঘটনার পর থেকেই গায়েব ছিল সে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম চন্দ্রপাল রামখিলাড়ি, ওরফে নেতা (৩৪)। মালওয়ানি থানার পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৫ সেপ্টেম্বর মালাডের চার্চ রোড এলাকার সাওয়ান্ত কম্পাউন্ডে এক মহিলা অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছেন বলে তাদের কাছে ফোন আসে। খবর পেয়েই পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ওই মহিলাকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক তদন্তে মহিলার পরিচয় জানা না গেলেও, পরে পুলিশ জানতে পারে তিনি পেশায় একজন যৌনকর্মী।
প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাকে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হলেও, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসতেই গোটা ঘটনা মোড় নেয়। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই মহিলাকে এবং খুনের আগে তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছিল। এর পরেই পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) এবং ৩৭৬ (ধর্ষণ) ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্তের গতি বাড়ায়।
অপরাধীর কোনও সূত্র না পেয়ে তদন্তকারীরা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করেন। সেই ফুটেজেই অপরাধের কিনারা হয়। একটি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার রাতে ওই মহিলার সঙ্গে ছিলেন অভিযুক্ত অটোচালক। এমনকী, একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় স্পষ্ট ধরা পড়ে যে, চন্দ্রপাল ওই মহিলারই ওড়না তাঁর গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, টাকা-পয়সা সংক্রান্ত কোনও বিবাদের জেরেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। বচসা চলাকালীনই চন্দ্রপাল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই কাণ্ড ঘটায় বলে মনে করা হচ্ছে।
সিসিটিভি ফুটেজ থেকে অভিযুক্তকে শনাক্ত করার পর পুলিশ তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। প্রযুক্তিগত তদন্ত এবং গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত চন্দ্রপাল আদতে আগ্রার বাসিন্দা এবং সে মুম্বই থেকে পালিয়ে উত্তরপ্রদেশের মথুরায় গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। দেরি না করে মুম্বই পুলিশের তদন্তকারীদের একটি বিশেষ দল মথুরায় রওনা দেয়। সেখানে স্থানীয় পুলিশের সাহায্যে অভিযুক্ত চন্দ্রপালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে সে।
এক পুলিশ আধিকারিক ঘটনার প্রেক্ষিতে জানিয়েছেন, “অভিযুক্তকে মথুরার স্থানীয় আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালত তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে মুম্বই নিয়ে আসার অনুমতি দিয়েছে। তাকে মুম্বইয়ে নিয়ে এসে বিস্তারিত জেরা করা হবে। খুনের পিছনে সঠিক কারণ কী ছিল এবং আর কেউ এই ঘটনায় জড়িত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পুনর্নির্মাণও করা হতে পারে।”