• মুসলিম হয়েও দুর্গার আরাধনায়, আজ ছুটি পাবে প্রদীপের 'ভূতেরা'!
    ২৪ ঘন্টা | ০২ অক্টোবর ২০২৫
  • পার্থ চৌধুরী: আজ মায়ের বিদায়ের পালা। সকাল থেকে মন ভার। আজ থেকে ছুটি পাবে প্রদীপের ভূতেরা। প্রদীপের জিন শুনেছেন, এই প্রদীপের কিন্তু বিশুদ্ধ ভূত। ব্রক্ষ্মদত্যি, শাকচুন্নী,লুল্লু, কারিয়া পিরেত। ত্রৈলোক্যনাথের বই থেকে ভূতগুলো নেমে এসেছিল গোলাহাট প্রগতি সংঘের মন্ডপে। সনাতনী মাকে আবডালে রেখে শেওড়া গাছের ডাল থেকে ভূতগুলো নেমে আসছিল। শিহরণ ধরছিল দর্শনার্থীদের শরীর আর মনে।

    এই পুজো কাউন্সিলর কাম বর্ধমান পুরসভার  জঞ্জাল বিভাগের এম সি আই সি প্রদীপ রহমানের পুজো। তরুণ প্রদীপ ধর্মে মুসলমান। কিন্তু ছোট থেকে বাড়ি আর পাড়ার পরিবেশ তাকে হিন্দুদের পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছে। তিনি এই এলাকায় বাঁকা নদীর ধারে শিবের মূর্তি বসিয়েছেন। সেখানে সোমবার আরতি হয়। গড়েছেন একাধিক শিব আর কালীর মন্দির। আবার কবরখানার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে তাঁর আমলে।

    তবে তার এই ভূতের ভয় বিনা টিকিটে দেখতে ভিড় জমেছে মারকাটারি। দু একজন অসুস্থ হয়েও পড়েছে। সংগে সংগে ব্যবস্থা নিয়েছে পুজো কমিটি। দুর্গাপুরে পশ মলে পয়সা দিলে ভূত দেখা যায়। একদিন বিনা পয়সায় ভূতের নেত্য দেখালেন প্রদীপকুমার। সমালোচনা থাকবেই। কেউ কেউ বলছেন, ' পুজো কোথায়? এ তো মানুষের ঝুলন?' ভিড় সে কথা মানেনি। তবে প্রদীপ জানিয়েছেন, ভূতের ভয় পাওয়ানো তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। তারা বোঝাতে চেয়েছেন 'ভূত বলে আসলে কিছু নেই। সব সাজানো ঘটনা। সবটাই বানানো।'

    দাপুটে কাউন্সিলর হলেও সমাজসেবায় প্রদীপের মন বেশি। দু হাজার টাকা ভাড়া দিলেই বিয়েবাড়ি ভাড়া পাওয়া যায় তার দফতরে। গরিবের জন্য নি:শুল্ক। আবার বাঁকায় জল জমলে এলাকার মানুষের দুয়ারে পৌছে যান সাইকেল চেপে। তাই ' হাজার ভূতের রাজার দয়া ' প্রদীপের উপর।  তড়তড় করে উপরে উঠে আসছেন রাজনীতির সাপলুডো খেলায়। 

    তবে এখানেই শেষ নয়। হিংসায় উন্মত্ত পৃথিবীতে শান্তির বাণী শুনিয়েছিলেন যিনি সেই তথাগত বুদ্ধের ফাইবার গ্লাসের মূর্তি বসাচ্ছেন বাঁকার পাড়ে। প্রদীপের নিচে অন্ধকার থাকে। এই প্রদীপ দূর করতে চান ভেদাভেদের অন্ধকার।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)