• খেলতে খেলতে আচমকা পা পিছলে পড়ে মৃত্যু মাত্র আট বছরের শিশুর! শহরে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ...
    আজকাল | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আঁতকে উঠল গুরুগ্রাম। খেলতে গিয়ে বাড়ির ব্যালকনি থেকে পড়ে মৃত্যু হল ৮ বছরের এক শিশুর।

    পুলিশ সূত্রে খবর, এক সঙ্গে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় খেলছিল দুই ভাই। তাঁদেরই একজন আচমকা ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যায়৷ ফলস্বরূপ ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। ঘটনায় এলাকা জুড়ে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত শিশুর বাবা পুলিশকে জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর দুই ছেলে বারান্দার কাছে একসঙ্গে খেলছিল, তখন এই দুর্ঘটনা ঘটে। খেলতে খেলতে বড় ছেলে রৌনক (৮) দ্বিতীয় তলার বারান্দার গ্রিলের উপর উঠে পড়েছিল। সেখান থেকেই ভারসাম্য হারিয়ে নিচে রাস্তায় পড়ে যায় সে। ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে পরিবার তাকে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে৷ সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নিহতের বাবা পেশায় একজন শ্রমিক। তাঁর দ্বিতীয় সন্তানের বয়স ৬।

    খবর পেয়ে পুলিশ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান হয় স্থানীয় হাসপাতালে। ময়নাতদন্তের পর শিশুর দেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

    প্রসঙ্গত, কিছু আগেই কর্নাটকের বিদারে একই ভাবে ছাদ থেকে হঠাৎ পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় এক নাবালিকার। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল ছাদে একা একা খেলতে গিয়েই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল সে। কোনও ভাবে ভারসাম্য হারিয়ে চারতলা থেকে নীচে পড়ে যায় নাবালিকা। কিন্তু নাবালিকার মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর জানা যায়, দুর্ঘটনার জেরে নয়, তাকে খুন করা হয়েছিল। তাও আবার পরিকল্পনামাফিক। নাবালিকার সৎ মা চারতলার ছাদ থেকে তাকে ধাক্কা মেরে নীচে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। 

    ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর এক প্রতিবেশী সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গোটা বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি সেই ফুটেজ জমা দিতেই আসল ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। হাড়হিম কাণ্ড দেখে শিউরে ওঠেন প্রতিবেশীরা। 

    ২৭ আগস্ট আর্দশ কলোনিতে সাত বছর বয়সি ওই নাবালিকা আবাসনের চার তলা থেকে পড়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন, নাবালিকা খেলতে খেলতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়।

    সেদিন সন্ধ্যায় আর্দশ কলোনির বাসিন্দারা বিকট শব্দ শুনে আবাসনের নীচে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, সাত বছরের ওই নাবালিকা রক্তাক্ত অবস্থায় আবাসনের নীচেই পড়ে আছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেও শেষরক্ষা হয়নি। নাবালিকাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। নাবালিকার বাবা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, আবাসনের ছাদে খেলাধুলা করছিল নাবালিকা। সেখান থেকেই পড়ে যায় সে। পুলিশ সেই সময় দুর্ঘটনাবশত মৃত্যু হিসাবে মামলা রুজু করে।

    দুই সপ্তাহ পর ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। গত ১২ সেপ্টেম্বর এক প্রতিবেশী একটি সিসিটিভি ফুটেজ জমা দেন থানায়। ওই আবাসনের পাশের বহুতলেই থাকতেন ওই ব্যক্তি। তিনিও ওই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন। দেখা গেছে, সেদিন ছাদে নাবালিকার সঙ্গে তার সৎ মা রাধাও ছিলেন। একটি চেয়ারের উপর প্রথমে একটি ঝুড়ি রাখেন তিনি। তাতে ওই নাবালিকাকে বসিয়ে দেন। কয়েক সেকেন্ড পর সেটি ধাক্কা দিতেই নাবালিকা ছাদ থেকে নীচে পড়ে যায়। 

    সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিও দেখে শিউরে ওঠে নাবালিকার পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারাও। চমকে যায় পুলিশও। নাবালিকার মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর জানা যায়, দুর্ঘটনার জেরে নয়, আদতে তাকে খুন করা হয়েছে। এরপরই নাবালিকার ঠাকুমা বিদারের গান্ধীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত রাধাকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেয় পুলিশ। ওই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে তারা। পাশাপাশি অভিযুক্ত রাধাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

    তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, নাবালিকার মা ছয় বছর আগে মারা যান। নাবালিকার বাবা সিদ্ধার্থ ২০২৩ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। রাধা ও সিদ্ধার্থের যমজ সন্তান রয়েছে। পুলিশের অনুমান, স্বামীর প্রথম স্ত্রীর সন্তানকে মন থেকে মেনে নিতে পারেননি রাধা। হিংসা, সম্পত্তির ভাগাভাগির জেরেই খুনের ঘটনা কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
  • Link to this news (আজকাল)