• আরও বিপদে মধ্যপ্রদেশের সেই চিকিৎসক, কাফ সিরাপ কাণ্ডে এ বার ‘পারিবারিক’ ওষুধের দোকানে তল্লাশি
    এই সময় | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
  • ‘কোল্ডরিফ’ কাফ সিরাপ ব্যবহার করে মৃত্যুর ঘটনায় আগেই মধ্যপ্রদেশের চিকিৎসক প্রবীণ সোনিকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সেই সূত্রেই ওই কাফ সিরাপ বিক্রির জন্য মধ্যপ্রদেশের পারাসিয়ার ‘অপনা মেডিক্যাল স্টোর’ নামে এক ওষুধ দোকানের লাইসেন্স বাতিল করল মধ্যপ্রদেশ সরকার। সূত্রের খবর, ওষুধের দোকানটি অভিযুক্ত চিকিৎসক প্রবীণ সোনির পরিবারেরই।

    বিষাক্ত ‘কোল্ডরিফ’ কাফ সিরাপের ৬০০টি শিশি জব্বলপুর থেকে ছিন্দওয়াড়া এসেছিল। ওই ব্যাচের ওষুধগুলির মধ্যে ৪০০টি শিশি উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিন্তু এখনও ২০০টি শিশি উদ্ধার হওয়া বাকি। ওই ওষুধ হয়তো ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

    প্রসঙ্গত, ‘কোল্ডরিফ’ কাফ সিরাপ আগেই নিষিদ্ধ করেছিল কেন্দ্র। আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, ওই ওষুধের নমুনায় ৪৮.৬% বিষাক্ত ডাই ইথিলিন গ্লাইকল পাওয়া গিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কী ভাবে এত সংখ্যক ওষুধ আনা হলো তা নিয়ে তদন্ত করছে রাজ্য সরকার।

    এক তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, দোকানটি প্রবীণ সোনির বাড়ির একতলায় তাঁর ক্লিনিকের পাশেই রয়েছে। ওই বিপুল পরিমাণ ‘কোল্ডরিফ’ সিরাপের ব্যাচ কী ভাবে এল দোকানে, তার কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি দোকানের লোকজন। স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে নাকি অন্য কোনও উপায়ে আনা হয়েছে ওই ওষুধ, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

    ছিন্দওয়াড়ার ফুডস অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের আধিকারিক শরদ কুমার জৈন জানান, ওই ওষুধ দোকানে তল্লাশি করে বেশ কিছু অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। সেই কারণেই ১৯৪৫ সালের ফুড অ্যান্ড কসমেটিক্স রুল অনুযায়ী ওই দোকানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। তিনি জানান, দোকানের সেলস বিল ঠিকঠাক নেই। এমনকি কোনও রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্টের উপস্থিতি ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করা হতো। তিনি আরও জানান, এর আগেও ওই দোকানে অভিযান চালানো হয়েছিল। বেনিয়মের প্রমাণ তখনই পাওয়া যায়। তখন শো-কজ় করা হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনও কারণ দর্শাতে পারেননি দোকানের মালিক।

    দোকানের লাইসেন্স বাতিলের পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশের সরকার ছিন্দওয়াড়ার ড্রাগ ইন্সপেক্টর এবং জব্বলপুরের ড্রাগ ইন্সপেক্টর শরদ কুমার জৈনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর শোভিত কোশতাকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। অন্যত্র বদলি করা হয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার দীনেশ মৌর্যকে। এত জন আধিকারিকের নজর এড়িয়ে কী ভাবে নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ বাজারে এলো সে বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

    সরকারি সূত্রে খবর, ছিন্দওয়াড়া এবং পারাসিয়ার বেসরকারি চিকিৎসক, হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরকারের তরফে বৈঠক করা হয়েছে। সেই বৈঠকে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এবং কী ভাবে দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় সেই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রয়োজনে গুরুতর অসুস্থদের নাগপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হবে বলে সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আর কোনও হাসপাতালে বা নার্সিংহোমে এখনও ওই কাফ সিরাপ মজুত আছে কি না তাও তল্লাশি করে দেখা হবে।

  • Link to this news (এই সময়)