• পুরসভার অ্যাকাউন্ট থেকে লোপাট ১ কোটি ৪৩ লক্ষ! গ্রেফতার অ্যাকাউন্ট্যান্ট, জালে আরও ৩...
    ২৪ ঘন্টা | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • অরূপ লাহা: বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্ট থেকে লোপাট ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা। সেই ঘটনায় গ্রেফতার বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্ট্যান্ট সমীররঞ্জন মুখোপাধ্যায়। গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্র পুলিসের ইকোনমিক অফেন্স উইংস। আগেই সমীররঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের নামে এফআইআর দায়ের করে মহারাষ্ট্র পুলিস। সোমবার রাতেই বর্ধমান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্র পুলিস। মঙ্গলবার তাঁকে ট্রানজিট রিমাণ্ডের জন্য বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয় মহারাষ্ট্র পুলিসের পক্ষ থেকে। আদালত ৩ দিনের ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করে আগামী ১০ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট  আদালতে পেশের নির্দেশ দেন।

    গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর বর্ধমান পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানতে পারে তাদের রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের চেক ব্যবহার করে তিনটি চেকে প্রায় ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রের নাগপুরে একটি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় পৌরসভা বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করে। একই সাথে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তরফেও মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধা জেলার হিঙ্গালঘাট থানায় পুলিসের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। মহারাষ্ট্র পুলিস তদন্তে নেমে সোমবার রাতে বর্ধমান থেকে গ্রেফতার করে সমীররঞ্জনকে।মহারাষ্ট্র পুলিস তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বয়ানের ভিত্তিতে এবং ঘটনার আগে ফোনে তিনজনের সাথে যোগাযোগের তথ্য পেয়ে এবার সমীররঞ্জনকে গ্রেফতার করল মহারাষ্ট্র পুলিস।

    এর আগে সমীররঞ্জন মুখোপাধ্য়ায় মহারাষ্ট্রের একটি আদালতে জামিনের আবেদন করেও জামিন পাননি। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে,২০২৪ সালে পুরসভার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে চেকের মাধ্যমে দুতিন-দফায় ৪৮লক্ষ, ২১ হাজার ও ৯৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। শেষের চেকটি জমা দেওয়ার পর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পুরসভাকে জানালে বিষয়টি পুরসভার নজরে আসে। এরপরই বর্ধমান পুরসভা বর্ধমান থানায় ও রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের তরফে মহারাষ্ট্রের হিঙ্গানঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। যদিও পুরসভার দাবি, অরজিনাল চেকের পাতা দুটি তাদের অফিসের চেক বুকেই আছে। পুরসভা আরোও জানতে পারে চেকে পুরসভার চেয়ারম্যানের সই আছে।

    যদিও পুরসভার দাবি, অ্যাকাউন্টের হোল্ডার ফিনান্স অফিসার ও পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক।তাহলে কিভাবে চেয়ারম্যান অ্যাকাউন্টটির হোল্ডার না হওয়া সত্ত্বেও টাকা উঠে গেল সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলে পুরসভা।এমনকি পুরসভার ফিনান্স দপ্তর দাবি করে,অ্যাকাউন্টে সমীররঞ্জনের ফোন নম্বর থাকলেও তাঁর কাছে কোনো ফোন বা টাকা উঠে যাওয়ার পর কোনো এসএমএস আসেনি। পাশাপাশি পুর কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন তোলে যেখানে চেয়ারম্যান অ্যাকাউন্টটির হোল্ডার নন,তাহলে কি করে তাঁর সই করা চেকে টাকা উঠলো? এরপরই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে লোপাট হয়ে যাওয়া পুরো টাকাটাই রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের তরফে বর্ধমান পুরসভার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়।

    মহারাষ্ট পুলিসের দাবি,তাদের হাতে গ্রেফতার হওয়া তিনজনের সাথে আগে থাকতেই ফোনে যোগাযোগ ছিল সমীররঞ্জন মুখার্জীর। এরপরই বর্ধমান থেকে সমীররঞ্জনকে গ্রেফতার করে পুলিস। পাশাপাশি পুর কর্তৃপক্ষের দাবি করে যে,চেক ক্লোন করে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। যদিও ফোনে যোগাযোগের বিষয় উড়িয়ে দিয়ে সমীররঞ্জন মুখোপাধ্য়ায়ের আইনজীবী পার্থ হাটির দাবি,হয়তো ফোন ক্লোন করে কথা বলা হয়েছে,কোনো দুস্কৃতি সেই ফোন নম্বর ব্যবহার করে কথা বলেছে। এর সাথে সমীরবাবুর কোনো যোগাযোগ নেই।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)