এনসিআরবি-র রিপোর্ট প্রকাশ, রেল ট্র্যাকে দুর্ঘটনায় দ্বিতীয় স্থানে বাংলা
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫প্রথম পাঁচ রাজ্যের মধ্যে প্রথম উত্তরপ্রদেশ এবং দ্বিতীয় বাংলা। গোটা দেশের সব প্রান্তের অপরাধ প্রবণতা এবং দুর্ঘটনার খতিয়ান প্রকাশ করে এনসিআরবি। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এই রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে তাদের কর্মপদ্ধতি নির্ণয় করে। দেশের কোথায় কী ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং তার ফলে কত মৃত্যু হয়েছে তা পেশ করে এনসিআরবি। সেই অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ করা হয়ে থাকে। তাই এসিআরবি-র রিপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি ২০২৩-এর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে এনসিআরবি। তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২২-এ রেলের ট্র্যাকে দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার ১৩৯টি। ২০২৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৪ হাজার ৬৭৮টি। অর্থাৎ এক বছরে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে প্রায় ৬.৭ শতাংশ।
সন্ধে ৬টা থেকে রাত ৯টা — এই তিন ঘণ্টাতেই রেলের ট্র্যাকে দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি হয়েছে বলে রিপোর্টে জানিয়েছে এনসিআরবি। রেলের দুর্ঘটনাগুলোকে রিপোর্টে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে ২০২৩–এর দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৫৬টি ঘটনার জন্য দায়ী মোটরম্যানের গাফিলতি।
অন্য দিকে ৪৩টি ঘটনা ঘটেছে যান্ত্রিক সমস্যা, ট্র্যাকের ত্রুটি বা কোনও ব্রিজ ভেঙে পড়ার কারণে। রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘বাড়ির ফেরার তাড়ায় অনেকে ওই সময়ে শর্টকাট হিসেবে রেলের ট্র্যাক বেছে নেন। এদের অনেকে কানে ফোন দিয়ে গল্প করতে করতেও যান। দুর্ঘটনার পিছনে এই দুটি কারণও থাকে।’
রেলের ট্র্যাকে দুর্ঘটনার তালিকায় একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে অসাবধানী যাত্রীদের উল্লেখ। যে কোনও জায়গা দিয়ে ট্র্যাক পার হওয়ার প্রবণতা তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। এই ক্ষেত্রে গোটা দেশে যত দুর্ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। আর দ্বিতীয় স্থানে আছে বাংলা।
এনসিআরবি রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০২৩–এ উত্তরপ্রদেশে ট্র্যাক পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার ঘটেছে ২ হাজার ৪৮২টি। এর ফলে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১ হাজার ২৫ জনের। বাংলায় ট্র্যাক পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৮০৫টি। এর ফলে মৃতের সংখ্যা ৫৮১। চলন্ত ট্রেন থেকে যাত্রীদের পড়ে যাওয়ার পরিসংখ্যানও দিয়েছে এনসিআরবি। রিপোর্ট অনুযায়ী সারা বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১৫ হাজার ৮৭৮টি ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য ভারতীয় রেল যাত্রীদের জন্য একাধিক সচেতনতামূলক প্রচার শুরু করেছে। ট্রেনে নজরদারি বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাতে যে সেভাবে লাভ কিছু হয়নি, তা এনসিআরবি–র রিপোর্টে স্পষ্ট। ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে ভ্রমণ এবং অসাবধানতার জন্য ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা আটকানো সম্ভব হয়নি।
