কালীপুজোর ইউনেস্কো স্বীকৃতির লক্ষ্যে তৈরি বারাসাত, একগুচ্ছ পরিকল্পনা পুলিশের...
আজকাল | ১১ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঐতিহ্যবাহী বারাসতের কালীপুজো এবার পৌঁছতে চলেছে ইউনেস্কোর টেবিলে। আর সেই লক্ষ্যকে সফল করতে বারাসত পুলিশের পক্ষ থেকে একগুচ্ছ পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া পুজোর দিনগুলিতে বারাসাতবাসী হিসেবে পরিচয় সুনিশ্চিত করতে আধার কার্ড ও কর্মক্ষেত্রের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার কথা বলেছেন। শুক্রবার কালীপুজো নিয়ে সমন্বয় বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বারাসাতের পুরপ্রধান অশনি মুখোপাধ্যায়।
কালীপুজোকে ইউনেস্কোর টেবিল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এদিনের বৈঠকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কালীপুজোর জন্য আগামী ২০ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর প্রতিদিন দুপুর ২টো থেকে রাত দুটো পর্যন্ত জাতীয় সড়ক নো-এন্ট্রি থাকবে। তাতে প্রতিমা দর্শনার্থীদের পুজো দেখার সুবিধা হবে বলেই পুলিশ কর্তারা মনে করছেন। উল্টোদিকে পুলিশের ওই সিদ্ধান্তে কর্মস্থল থেকে ছুটির পর বাড়িতে পৌঁছতে কার্যত নাজেহাল সম্ভাবনা রয়েছে বলে বাসিন্দারা মনে করছেন।
বারাসাত শহরের অধিকাংশ পুজো মূলত ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া হওয়ায় ডাকবাংলো থেকে ময়না পর্যন্ত দুপুরের পর থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যা গড়াতেই জাতীয় সড়ক কার্যত দর্শনার্থীদের দখলে চলে যায়। লক্ষ লক্ষ ভিড় সামাল দিতে ট্রাফিক ব্যবস্থাকে চলতি বছর পুলিশ কর্তারা ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। দুর্ঘটনা ও যানজট এড়াতে বারাসাত শহরে ঢোকার চতুর্দিকে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। মধ্যমগ্রামের যশোর রোডের আপনালয় হাইজিং, বাদু রোডের কাঞ্চনতলা, সোদপুর রোডের বাদামতলা, হাবড়ার চোংদা মোড়, গুমা আমডাঙার সন্তোষপুর মোড়-সহ ব্যারাকপুর রোডের নীলগঞ্জ ব্যাংক মোড় পর্যন্ত কোনওভাবেই পণ্যবাহী গাড়ি শহরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কলকাতাগামী দূরপাল্লার বাসগুলোকে জাগুলি মোড় থেকে ঘুরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গগামী বাসগুলোকে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ডাইভার্ট করার কথা জানানো হয়েছে।
সমন্বয় বৈঠক থেকেই জাতীয় সড়কের ধারে কোনও রকমের স্টল, ওভারহেড গেট না করার জন্য পুলিশ সুপারিশ করেছে। যদিও ইতিমধ্যে শহরের একাধিক পুজো কমিটি জাতীয় সড়কে ওভারহেড গেট বানিয়ে ফেলেছে। পুজো মণ্ডপের বাইরের গেটের সামনে কোনওভাবেই মেলা করা যাবে না বলেই পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে। পুলিশ-প্রশাহন এন্ট্রি গেটের তুলনায় এগজিট গেট তুলনায় বড় রাখা, পুজো মণ্ডপে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
বারাসাতের কালীপুজো মানেই তার একটা ঐতিহ্য রয়েছে। পুজোর দিনগুলো গোটা শহর আলোয় ভেসে যায়। পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া বলেন, 'গত বছর খুব ভালোভাবে আমরা ভিড় সামাল দিয়েছি। এ বছরও ট্রাফিক ব্যবস্থাকে সঠিক রাখার চেষ্টা করব। দর্শনার্থীদের চাপ খুব বেশি হলে কয়েক ঘণ্টার জন্য জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখা হবে। অফিস ফেরত শহরের বাসিন্দাদের বাড়িতে পৌঁছতে যাতে সমস্যা না হয়, তার জন্য আধার কার্ড ও কর্মক্ষেত্রের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে।'
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, 'ডাকবাংলো মোড় থেকে হেলাবটতলা মোড় পর্যন্ত জাতীয় সড়ক অপ্রশস্ত। তাই, দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়লে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে।'