দ্বন্দ্বে আটকে পদ্মের রাজ্য কমিটি, ক্ষোভ সামলাতে হস্তক্ষেপ অমিত শাহর!
প্রতিদিন | ১৪ অক্টোবর ২০২৫
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচন শুরু হতে বাকি মাত্র পাঁচ মাস। অথচ নতুন রাজ্য কমিটি গঠন নিয়ে তুমুল মতবিরোধ বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। অনেকে পদ ছাড়তে নারাজ। আবার নয়া রাজ্য কমিটিতে নতুন মুখ তথা দলের পুরনোদের প্রাধান্য দিতে চায় ‘টিম শমীক’। সূত্রের খবর, দুই শিবিরের মধ্যে সমন্বয় রেখে নয়া রাজ্য কমিটি ঘোষণা করতে কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতাদের। অন্তত এমনটাই খবর গেরুয়া শিবির সূত্রে। জানা গিয়েছে, দু’পক্ষের মধ্যে সমন্বয় রেখে বঙ্গ বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটি গঠনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হতে পারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেই। শাহ নিজে কমিটি তৈরি করে দিলে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ কম হবে। নয়া রাজ্য কমিটি গঠন নিয়ে মতানৈক্য ও কোন্দল না মিটলে শেষমেশ কমিটির সদস্যদের নাম চূড়ান্ত করতে পারেন অমিত শাহ নিজেই।
সূত্রের খবর, শাহ-নাড্ডাকেই হস্তক্ষেপ করতে হতে পারে কোন্দল সামলে বঙ্গ বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটি গঠন করতে। বিজেপি পার্টির সংবিধান অনুযায়ী নতুন সভাপতি আসার পর নিজের টিম তৈরি করেন। কিন্তু শমীক ভট্টাচার্য বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হওয়ার পর তিনমাস কেটে গেলেও নতুন টিম ঘোষণা হয়নি। ভোট হতে আর খুব কম সময়ই বাকি। আবার নতুন কমিটি ঘোষণা হলেও নতুনরা অল্প সময়ে কীভাবে সংগঠনের কাজ রপ্ত হতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। নয়া কমিটি ঘোষণা না হওয়ায় মুখ ফিরিয়ে থাকা আদি শিবিরের সিংহভাগ অংশ এখনও নিষ্ক্রিয়ই। ফলে ছাব্বিশের ভোটকে সামনে রেখে সংগঠন বড়সড় ধাক্কা খেতে পারে নেতাদের সমন্বয়ের অভাবের জন্য।
আসলে নতুন রাজ্য সভাপতি শমীক শিবির যে রাজ্য কমিটির তালিকা পেশ করেছেন, তা মানতে চাইছে না আগের শিবির। বর্তমান একাধিক পদাধিকারীকে পদে পুনর্বহাল রাখতে দলের অন্দরে সরব তাঁদের শিবিরের লোকজন। আর এসবের মধ্যেই নতুন রাজ্য কমিটিতে আদি-নব্য সমন্বয় করেই এগোতে চাইছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কারণ, বর্তমান কমিটিতে যাঁরা আছেন তাঁদের সরিয়ে দিলে ক্ষোভ বাড়বে। আবার কমিটিতে পুরনোদের সক্রিয় করে কাজের সুযোগ না দিলে আদি শিবির চটতে পারে। কারণ, বর্তমান কমিটির সিংহভাগ নেতৃত্বের উপরই ক্ষুব্ধ আদি শিবির। ফলে সবমিলিয়ে পরিস্থিতি জটিল।
আদি শিবিরের বড় অংশ চাইছে নতুন রাজ্য কমিটিতে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সংগঠনকে বদল করতে হবে। সেই পদে নতুন কাউকে আনতে হবে। কিন্তু সংগঠন সম্পাদককে বদল করলে নতুন যিনি আসবেন, তিনি ভোটের মুখে কতটা কাজ করতে পারবেন তা নিয়ে আবার সংশয় রয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের। গেরুয়া শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, নয়া কমিটি গঠনে রাজ্য বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা কেন ‘ধীরে চলো নীতি’ গ্রহণ করছেন? শমীক শিবিরের অবশ্য দাবি, কালীপুজোর পরই নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা করে দেওয়া হবে।