• ৩ তৃণমূল নেতার টাকা ভাগ-বাটোয়ারার ভিডিও ভাইরাল, তোপ বিরোধীদের, রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • বর্ধমানের রাজনৈতিক মহলে শোরগোল। তিন তৃণমূল নেতার টাকা ভাগাভাগির ভাইরাল ভিডিও  ঘিরে তরজা তুঙ্গে। যদিও ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি দৈনিক স্টেটসম্যান। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে,  টাকা ভরা ব্যাগ নিয়ে এসেছেন পূর্ব বর্ধমানের গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী-সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায়।  টেবিলে রাখা হয়েছে সেই টাকা। তারপর টাকার গোছা তিনজনের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেওয়া হচ্ছে।

    অনুপ চট্টোপাধ্যায় ছাড়া ভিডিওতে দেখা গেছে পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ পার্থ মণ্ডল ও বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই। ভাইরাল ভিডিও নিয়ে পার্থ মণ্ডল জানিয়েছেন, ভিডিওটি ২ বছর আগের। লোকসভা নির্বাচনের সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য ওই টাকা বিলি করা হচ্ছিল। ডায়েরিতে তার হিসেব রাখা আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। খুব স্বাভাবিক ভাবেই ভাইরাল ভিডিও নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিরোধীরা।

    ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, একটি বন্ধ ঘরে বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুইয়ের সঙ্গে সিগারেটে টান দিতে দিতে ডায়েরিতে কিছু লেখা হচ্ছে। আর লিখছেন গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায়। বিধায়কের সামনে রাখা লক্ষাধিক টাকার বাণ্ডিল। টাকার ভাগ-বাটোয়ার হিসেব লিখছিলেন অনুপ, এই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। থোকা থোকা টাকা তৃণমূল নেতারা কোথা থেকে পেলেন তা নিয়েও তোলা হয়েছে প্রশ্ন। কীসের উদ্দেশে টাকা তিনজনের মধ্যে ভাগাভাগি হচ্ছিল, এই রকম একাধিক প্রশ্ন ভাইরাল ভিডিও ঘিরে ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে।

    বর্তমানে গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সর্বেসর্বা অনুপ চট্টোপাধ্যায়। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার সমিতির সহকারী সভাপতি হয়েছেন। তাঁকে চেয়ারে বসিয়েছেন কৃষি কর্মাধ্যক্ষ পার্থ মণ্ডল। তিনি আবার বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুইয়ের ছায়াসঙ্গী। সমিতির সবটাই নিয়ন্ত্রণ করেন অনুপ ও পার্থ।

    বছর দুইয়েক আগে বিনা টেন্ডার, এমনকী কোনও কাজ না করেই মিড ডে মিলের রান্নাঘর সংস্কারের ১৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৯০৫ টাকা পেয়েছিলেন অনুপ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ একা ঠিকাদার। তা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তড়িঘড়ি রান্নাঘর মেরামতির কাজ শুরু করেছিলেন তৎকালীন বিডিও দেবলীনা দাস।

    রবিবার ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি নিয়ে পার্থ মণ্ডল দাবি করেছেন, ‘দুই বছর আগেকার ভিডিও। গত লোকসভা ভোটের আগে নির্বাচনী খরচের জন্য ওই টাকা দলের তরফে দেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য টাকা বণ্টন করা হচ্ছিল। একটা ডায়েরিতে তা নোট করেও রাখা হয়েছিল। সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল ঘরটি। তাই ওই ভিডিও কেউ শত্রুতা করে এভাবে ছড়িয়ে দিয়েছে। লোকসভা ভোটের সময়ও দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে ওই ভিডিও পাঠানো হয়েছিল। সেই সময় দলীয় নেতৃত্বের কাছে আমি ও বিধায়ক গিয়ে পুরো ঘটনাটা জানিয়ে ছিলাম।‘

    গলসির বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই ও গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ভাইরাল ভিডিও নিয়ে বিজেপি নেতা রমন সিং তৃণমূলকে নিশানা করেছেন। তৃণমূলকে দুর্নীতি এবং কাটমানির দল বলেও তোপ দেগেছেন তিনি। বিজেপি নেতা বলেন,  ‘তৃণমূল মানেই দুর্নীতি আর কাটমানি। অনুপ্রেরণার ফল এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে। কাটমানির টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করছে বিধায়ক ও নেতারা।‘

     
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)