• একরাতে খুন ৩ হাজার! ৪২ বছর পর ‘নেলি গণহত্যা’র রিপোর্ট পেশ করবে অসম সরকার
    প্রতিদিন | ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৮৩ সালে অসমের নেলি গণহত্যার রিপোর্ট পেশ করতে চলেছে অসম সরকার। অসমের মাটি থেকে বাঙালিদের তাড়াতে ৮০-র দশকে ফুঁসে উঠেছিল অসমের বাসিন্দারা। বাঙালি অধ্যুষিত নেলি-সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে অভিযান চালিয়ে একরাতে  ২০০০ থেকে ৩০০০ বাঙালিকে হত্যা করেছিল দুষ্কৃতীরা। ৪২ বছর পর অবশেষে সেই গণহত্যার রিপোর্ট পেশ হতে চলেছে অসম বিধানসভায়। জানা যাচ্ছে, নভেম্বর মাসে নারকীয় সেই হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে ত্রিভুবন প্রসাদ তিওয়ারি কমিশনের রিপোর্ট পেশ করবে সরকার।

    ‘নেলি গণহত্যা’র রিপোর্ট প্রসঙ্গে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, “এই রিপোর্ট অনেক আগেই প্রস্তুত করা হয়েছিল। তবে রিপোর্টের কপিতে তিওয়ারির সাক্ষর না থাকায় আগের সরকার এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। আগের সরকার এই রিপোর্ট নিয়ে সন্ধিহান ছিল। তবে আমরা রিপোর্ট তৈরির সঙ্গে জড়িত সরকারি আধিকারিক ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। রিপোর্টের ফরেনসিক পরীক্ষাও করা হয়েছে। তারপর নিশ্চিত হয়েছি রিপোর্টটি আসল।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “এই বিষয়ে একটি সাহসী পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল। এই রিপোর্ট বিধানসভায় পেশ করা উচিত কারণ এটি আমাদের ইতিহাসের অংশ। এই রিপোর্টের মাধ্যমে মানুষ জানতে পারবে, সেই সময় ঠিক কী ঘটেছিল।”

    উল্লেখ্য, অসমের ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায় ১৯৮৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি নেলি গণহত্যা। ইতিহাস বলে, আহম রাজবংশের পর ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে আসে অসম। সেই সময় বাংলা ও বিহার থেকে চা শ্রমিকদের এনে এখানে নিয়োগ করেছিল ব্রিটিশরা। অসম সীমান্তবর্তী বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর মানুষ এখানে এসে বসতি স্থাপন করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁরা ভোটাধিকারও পান। ৮০-র দশকে এই বাঙালিদের রাজ্যছাড়া করতে শুরু হয় আন্দোলন। আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (AASU)। দাবি ছিল, এই বাঙালিদের অসমের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এই দাবিতে নির্বাচন বয়কট করে AASU। এরপরও নওগাঁও জেলার নেলি-সহ মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামগুলি ভোটাধিকার প্রয়োগ করে।

    এরপরই ১৯৮৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতের অন্ধকারে হামলা চালায় আততায়ীরা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দুই থেকে তিন হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। যার বেশিরভাগই ছিল নারী ও শিশু। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ অনেককে গ্রপ্তার করে ঠিকই কিন্তু বিচার হয়নি। এরপর অসমের মানুষের বিক্ষোভের জেরে ক্ষমতায় আসা পরবর্তী সরকার নেলি গণহত্যার যাবতীয় মামলাগুলি প্রত্যাহার করে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)