অরুণাভ রাহারায়– আগামী ২২ জনুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে ৪৯তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা, চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের বইমেলার ফোকাল থিম কান্ট্রি আর্জেন্টিনা। সোমবার শহরের এক পাঁচ তারা হোটেলে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা ঘোষণা করেন সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং সুধাংশু শেখর দে।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আর্জেন্টিনা দূতাবাসের কনসুলার বিভাগের প্রধান আনন্দি কুয়েপো রিয়াভিৎজ এবং আরও এক শীর্ষ কর্তা। ভারত-আর্জেন্টিনার সুসম্পর্কের কথা অনেকেরই জানা। ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ পেরুতে যাওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে আর্জেন্টিনায় তিন মাস ছিলেন। সেই সময় ভিক্টোরিয়া ওকাম্পার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয়। অন্যদিকে, ফুটবেলার দেশ আর্জেন্টিনা। কলকাতায় মারাদোনার ভক্তের সংখ্যা কম নয়। ঘটনাচক্রে লিওনেল মেসিও চলতি বছর ডিসেম্বরে ভারতে আসছেন, বাংলাতেও পা রাখবেন তিনি।
বইমেলার উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দেশ ও বিদেশের বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক ও অন্যান্য গুণিজন। বইমালা স্থান, বইমেলা প্রাঙ্গণ, সল্টলেক। উল্লেখ্য, এবারও মেলায় থাকছে না বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন।
গিল্ড কর্তারা বইমেলার সার্বিক সহযোগিয়তার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু শেখর দে বলেন, ‘আপনারা সকলেই জানেন, বেশ কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা পৃথিবীর বৃহত্তম পাঠকধন্য বই উৎসব। ২০২৫ সালের বইমেলায় এসেছিলেন ২৭ লক্ষ বইপ্রেমী মানুষ, বই বিক্রির পরিমাণ ২৩ কোটি টাকা’।
তিনি আরও বলেন, ‘মেলার এই অভাবনীয় সাফল্যে আমরা যেমন আনন্দিত, তেমনই চিন্তান্বিতও। কারণ, আগামী বইমেলায় অংশগ্রহণের জন্য অনেক নতুন প্রকাশক আবেদন করেছেন। অথচ বইমেলা প্রাঙ্গণের পরিসর এতটুকুও বাড়ানো যায়নি। তদসত্ত্বেও গতবার আমরা সামান্য কিছু নতুন স্টল দিতে পেরেছি। তাই অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আগামী বইমেলায় স্টলের সংখ্যা আর বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।’
আগামী বছর কলকাতা বইমেলার সুবর্ণজয়ন্তী। গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘এই উপলক্ষে আমরা চাইছি, যেসব আলোকচিত্রী প্রথম ২০ বছর অর্থাৎ ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৬ অবধি ময়দানে আয়োজিত বইমেলার দুর্লভ সব ছবি তুলেছেন, তাঁদের আলোকচিত্রের একটি প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী করতে। এইসব দুর্লভ ও স্মৃতিবিজড়িত ফটোর মধ্যে সেরা ১০ টিকে আমরা যথাযোগ্য মূল্যে পুরস্কৃত করব’।
তিনি আরও বলেন, ‘২০২৬ বইমেলার প্রেস কর্ণারে তাঁদের পাঠানো সব ছবিই মনোনয়ন সাপেক্ষে প্রদর্শিত হবে। আমাদের এটাও ইচ্ছা, আগামী সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে এই ছবিগুলি বইমেলার স্মরণিকায় প্রকাশ করার। ই-মেলে স্বচ্ছন্দে আপনাদের সংগ্রহে থাকা যে-কোনও বইমেলার ছবি পাঠাতে পারেন। ছবি পাঠাবার শেষ দিন ১০ ডিসেম্বর ২০২৫।’