‘জোটধর্ম অমান্য করে দল ভাঙাচ্ছে বিজেপি’, শাহ-নাড্ডাদের কাছে নালিশ একনাথ শিণ্ডের
প্রতিদিন | ২০ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্থানীয় নির্বাচনের আগে মহারাষ্ট্রের শাসক জোটের অন্দরে ফের শুরু টানাপোড়েন। মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে দল ভাঙানোর অভিযোগ এনে অমিত শাহ-জেপি নাড্ডাদের কাছে নালিশ ঠুকে এলেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি নেতারা জোটধর্ম মানছেন না।
মহারাষ্ট্রে সামনে পুরসভা নির্বাচন। তার আগে স্থানীয় স্তরে নিজেদের মধ্যেই খেয়োখেয়ি করছে বিজেপি-শিব সেনা (শিণ্ডে সেনা)। শিণ্ডে সেনার অভিযোগ, বিজেপি কল্যাণ এবং ডম্বিভলি এলাকায় শিব সেনাকে ভাঙার চেষ্টা করছে। স্থানীয় স্তরের নেতারা শিব সৈনিকদের ভয় বা লোভ দেখিয়ে বিজেপিতে সামিল করছে। ওই এলাকার সাংসদ আবার খোদ একনাথ শিণ্ডের ছেলে শ্রীকান্ত। শুধু ওই এলাকা নয়, সর্বত্রই শিব সেনার প্রভাবশালী নেতাদের ভাঙানোর চেষ্টা হচ্ছে।
এ নিয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের কাছে আগেই নালিশ জানিয়েছেন শিণ্ডে। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিসকেও জানান তিনি। কিন্তু তিনিও কোনও পদক্ষেপ দেননি। স্রেফ মুখে বলেছেন, ‘সব জোট শরিকদের উচিত সংযত থাকা। শরিকদের ভাঙানো উচিত নয়।’ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে মহারাষ্ট্র বিজেপির সভাপতি রবীন্দ্র চহ্বান বুধবার রাতেও বেশ কয়েকজন শিব সেনা নেতার দলে অন্তর্ভুক্তিতে সায় দিয়েছেন। শেষে বাধ্য হয়েই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দ্বারস্থ হলেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী। বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ এবং বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে করেন শিণ্ডে। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি নেতারা জোটধর্ম মানছেন না। এভাবে জোটে থাকা কঠিন। যদিও পালটা বিজেপি নেতৃত্বের তরফে তিনি কোনও আশ্বাস পেয়েছেন কিনা স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রের শাসক জোটে এই মুহূর্তে বেশ কোণঠাসা একনাথ। ২০২৪ বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বেই লড়াইয়ে নেমেছিল এনডিএ জোট। কিন্তু ভোটে বিজেপি অভাবনীয় ফল করায় রাতারাতি সমীকরণ বদলে যায়। শিণ্ডেকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হন দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। শিণ্ডেকে হতে হয় উপমুখ্যমন্ত্রী। আবার এনসিপি নেতা অজিত পওয়ারও রয়েছেন একই পদে। ইদানিং দেখা যাচ্ছে অজিত পওয়ার এবং দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের সখ্য বাড়ছে। শিণ্ডের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে বিজেপির। এরই মধ্যে দল ভাঙানোর অভিযোগ। তাছাড়া শিণ্ডের ভয়ের আরও একটা কারণ আছে। মোদি জমানায় জোট শরিকদের ভাঙিয়ে বিজেপির নিজেদের শক্তি বাড়ানোর ভূরি ভূরি উদাহরণ রয়েছে। সেটা পাঞ্জাবে অকালি দলের ক্ষেত্রে হোক, বিহার জেডিইউয়ের ক্ষেত্রে হোক, তামিলনাড়ুতে এআইএডিএমকের ক্ষেত্রে হোক বা মহারাষ্ট্রেই অবিভক্ত শিব সেনার ক্ষেত্রে হোক।