এসআইআর-এ সময়সীমা বাড়লেও মৃত্যুর দায় কে নেবে? আক্রমণ তৃণমূলের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ৩০ নভেম্বর ২০২৫
এসআইআরের কাজ শেষ করতে মাত্র দুই মাস সময় দেওয়াকে শুরু থেকেই অযৌক্তিক বলে দাবি করে এসেছে তৃণমূল। এই স্বল্প সময়সীমার কারণে ভুলভ্রান্তির আশঙ্কা যেমন বাড়ে, তেমনি পাহাড়প্রমাণ চাপ নেমে আসে মাঠে কাজ করা বিএলও-দের উপর— এই যুক্তিই বারবার তুলে ধরেছিল শাসকদল। সেই চাপের কথা শেষ পর্যন্ত স্বীকার করে রবিবার বাংলা-সহ ১২ রাজ্যে ভোটার তালিকা প্রকাশের সময়সীমা বাড়াল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আর সেই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই কমিশনকে কার্যত খোলাখুলি একহাত নিলেন রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা।
রবিবার দুপুরে কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, এনুমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ দিন ৪ ডিসেম্বর নয়, ১১ ডিসেম্বর। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের তারিখ ৯ ডিসেম্বর থেকে সরিয়ে ১৬ ডিসেম্বর করা হয়েছে। আর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারির বদলে প্রকাশিত হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। সময়সীমা বাড়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বিএলও-রা।
Advertisement
এরপরই তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষোভ উজাড় করে দিলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও সাংসদ পার্থ ভৌমিক। চন্দ্রিমার বক্তব্য, ‘তৃণমূল কখনও এসআইআরের বিরোধিতা করেনি। বিরোধিতা করেছিল পদ্ধতির। বারবার বলেছিলাম, দুই মাসে এই ব্যাপক কাজ করা অসম্ভব। আজ সময় বাড়াতে বাধ্য হল কমিশন। তাহলে প্রমাণিত হল তো আমরা যা বলেছিলাম, সেটাই সঠিক ছিল।’
কিন্তু এখানেই থামেননি তিনি। তাঁর কড়া প্রশ্ন, ‘চাপের মুখে কাজ করতে গিয়ে অথবা তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ার ভয়ে এখনও পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার দায় নেবে কে? যখন সময় বাড়ানোই হল, তখন এত তাড়াহুড়ো কেন ছিল? আগে আমাদের কথা শুনলে এত বিশৃঙ্খলা হত না। দায় কমিশনেরই।’
সাংবাদিক সম্মেলনে আরও সরব হন পার্থ ভৌমিক। তাঁর অভিযোগ, ‘আমাদের মনে হচ্ছে কমিশন নিজের সিদ্ধান্তে চলছে না। বিজেপির নির্দেশেই সব করছে। এই কমিশন নিরপেক্ষ নয়, কেন্দ্রের শাসকদলের কথায় কাজ করছে। না হলে ভোটের মুখে থাকা রাজ্যগুলিতে এত দ্রুত এসআইআর কেন? বিএলও-দের উপর এত চাপ কেন? আর বাংলাতেই বিশেষ পর্যবেক্ষক পাঠানোর দরকার হল কেন?’
এসআইআরের সময়সীমা বাড়ানোয় প্রশাসনিক স্তরে কিছুটা স্বস্তি এলেও রাজনৈতিকভাবে তর্ক-বিতর্ক যে আরও তীব্র হল, তা দিনের শেষে স্পষ্ট হয়েছে।