রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই রাজভবনের নামবদল, তা নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূলের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ৩০ নভেম্বর ২০২৫
রাজভবনের নাম বদল নিয়ে ফের এক বার রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত তুঙ্গে। রাজভবনের নাম বদলে নতুন নাম হয়েছে ‘লোকভবন’। শনিবার সে কথা রাজভবনের তরফে জানানোও হয়েছে। এবার নাম বদল ঘিরে নতুন অভিযোগ। রাজভবনের নাম বদলে রাজ্য সরকারের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজভবনের নাম বদলে রাখা হয়েছে ‘লোকভবন’। নামের ফলকও বদলে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনায় রাজ্য সরকারে অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রাজভবন থেকে সমান্তরাল শাসন চালাচ্ছেন।
Advertisement
সিভি আনন্দ বোসের আগে বাংলার রাজ্যপাল ছিলেন জগদীপ ধনখড়। তাঁর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ছিল। তিনিও রাজ্য সরকারের অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন পদক্ষেপ করতেন বলে নানা সময় অভিযোগ ওঠে। সিভি আনন্দ বোসও জগদীপ ধনখড়ের দেখানো পথেই হাঁটছেন বলে অনেকে মনে করছেন। শনিবার রাজভবনে নামবদল নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র ও দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘রাজভবন হল লোকভবন। ২০২৬-এর ভোটের কথা মাথায় রেখেই কি এই বদল শুরু হল। রাজভবন লোকভবন করার বিজ্ঞপ্তি তো ছিল সারা দেশের জন্য। তাহলে বাংলাতেই কেন প্রথম। তার মানে কি রাজ্যপাল সমান্তরাল প্রশাসন চাইছেন?’
রাজ্যপালের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক এদিন বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘২০২৩ সালের ২৭ মার্চ মাননীয়া রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু, মাননীয় রাজ্যপাল ড. সি. ভি. আনন্দ বোসের অনুরোধে, তৎকালীন রাজভবনের প্রতীকী চাবি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেন।
এই ঐতিহাসিক মুহূর্তেই শুরু হয় মানুষের রাজভবন-এর নতুন অধ্যায়। জন রাজভবন-এর ধারণার পিছনে ছিল মানুষকে রাজভবনের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসার আকাঙ্ক্ষা-মানুষের আশা-স্বপ্ন, সমস্যাবলr ও প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে ভবনটিকে জীবন্ত করে তোলা। গত তিন বছরে জন রাজ ভবন মানুষের জন্য বহু সৃজনশীল এবং কল্যাণমুখী কার্যক্রম করেছে। মানুষের প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই লক্ষ্য ছিল।’
উল্লেখ্য, ‘রাজ’ শব্দটি ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত। তাই রাজ্যপাল রাজের পরিবর্তে ‘লোক’ শব্দটি বসানোর আবেদন জানিয়েছিলেন। কেন্দ্রের তরফে সিভি আনন্দ বোসের আর্জিতে সিলমোহর দেওয়া হয়। ২৫ নভেম্বর কে্ন্দ্রের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতেই বাংলা-সহ দেশজুড়ে রাজভবন নাম পরিবর্তনে সম্মতি জানানো হয়েছে। শনিবার, অর্থাৎ ২৯ নভেম্বর বাংলায় প্রথম সেই নির্দেশ কার্যকরী হয়েছে বলে রাজ্যপালের দপ্তর সূত্রে দাবি করা হয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে গোটা দেশে তা কার্যকরী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।