• পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষার র‍্যাকেট ধানবাদেও! উদ্ধার বিপুল অ্যাডমিট কার্ড
    প্রতিদিন | ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • শেখর চন্দ্র, আসানসোল: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের পরীক্ষা ঘিরে তৈরি হয়েছে একাধিক বিতর্ক। কোথাও টাকার বিনিময়ে রাজ্য পুলিশে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা, আবার কোথাও ভুয়ো পরীক্ষার আয়োজনের খবর সামনে এসেছে। এর মধ্যেই বড়সড় চক্রের হদিশ পেল পুলিশ। আর সেই জাল ছড়িয়ে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদেও। সেখানের একটি হোটেল বসে প্রশ্নপত্র এবং উত্তর সাজিয়ে পরীক্ষায় কারচুপি চালানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ। ঘটনায় ওই হোটেল মালিক-সহ মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের একটি টিমও ঝাড়খণ্ড পৌঁছে গিয়েছে। এই র‌্যাকেটের সঙ্গে কারা কারা যুক্ত, কতদিন ধরে এই চক্র সক্রিয় সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

    রবিবার ছিল পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের (WB Police Recruitment Scam) পরীক্ষা। একদিকে যখন পরীক্ষা চলছিল, সেই সময় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ঝরিয়ার লজে বিশেষ অভিযান চালায় সে রাজ্যের পুলিশ। হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয় ১৭ জনকে। ঘর থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ অ্যাডমিট কার্ড, প্রশ্ন-উত্তরের নোট, রেজিস্টার, মোবাইল ফোন, স্মার্ট ঘড়ি, বিভিন্ন এডুকেশন সার্টিফিকেট। এছাড়াও বেশ কয়েকটি পরিচয়পত্র, ব্যাংক সংক্রান্ত নথি-সহ অসংখ্য কাগজপত্রও উদ্ধার করা হয় ধৃতদের কাছ থেকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা বাংলার বিভিন্ন জেলা থেকে যেমন, নদিয়া, বীরভূম, রানাঘাট, চাকদাহ, হাসখালি থেকে একাধিক পরীক্ষার্থীকে এনে লজে রেখেছিল। পরীক্ষার আগেই তাঁদের উত্তরপত্র তৈরি করানো হয়েছিল বলে দাবি পুলিশের। এজন্য পরীক্ষার্থী পিছু ২ থেকে ৫ লক্ষ টাকার চুক্তি করা হয়েছিল বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

    ইতিমধ্যে ওই লজের রেজিস্টার খতিয়ে দেখেছেন পুলিশ আধিকারিকরা। তা খতিয়ে দেখে পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পারেন, ওই লজে ১০০-রও বেশি পরীক্ষার্থীর নাম নথিভুক্ত করে রাখা হয়েছিল। এরপরেই লজের মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত মোট ১৭ জনের মধ্যে ১৬ জনই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। একজন ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের বাসিন্দা। ধানবাদ সিটি এসপি ঋত্বিক শ্রীবাস্তব বলেন, ”ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। সে রাজ্যের আধিকারিকরা এসে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে।”

    অন্যদিকে ধানবাদ এসপি বলেন, ”ধৃতরা গত কয়েকদিন ধরে ঝরিয়াতে একটি লজে থাকছিল। পরীক্ষার্থীদের একটি জায়গায় জড়ো করে তাদের অ্যাডমিট কার্ড এবং মোবাইল ফোন আগেই নিয়ে নেওয়া হয়েছিল।” পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ”পুলিশ প্রায় ২৭২ জন প্রার্থীর অ্যাডমিট কার্ড, ৬৭টি মোবাইল ফোন এবং কিছু রেজিস্টার বাজেয়াপ্ত করে। পুরো ঘটনায় তদন্ত করা হচ্ছে।” অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কনস্টেবলের ওই পরীক্ষা ভুয়ো ছিল নাকি, আসল প্রশ্নপত্র এনে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য পুলিশের একটি টিম ধানবাদ পৌঁছে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)