চাদর কিনতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল নাবালিকা। পরে কাছেই একটি এলাকা থেকে অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয় নাবালিকার। পরিবারের অভিযোগ ছিল, নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বালুরঘাট জেলা আদালত।
পাঁচ বছর পরে দক্ষিণ দিনাজপুরে অন্যতম নৃশংস ঘটনার রায় শোনাল বালুরঘাট জেলা আদালত। শনিবার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক অভিযুক্ত তিন যুবক— মহাবুর মিঞা, গৌতম বর্মন ও পঙ্কজ বর্মনকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। তবে আদালতের এই রায়েও শান্তি পেল না নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবার। তাঁদের কথায়, ‘মেয়েকে যে ভাবে শেষ করেছে… ওদের ফাঁসি ছাড়া ন্যায় পূর্ণ হল না।’
সরকারি আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী জানান, ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি বিকেলে গঙ্গারামপুরের পঞ্চগ্রামের ওই নাবালিকা স্কুলছাত্রী চাদর কিনতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি। রাতভর খোঁজাখুজি করেও তাকে না পেয়ে পরিবার পরের দিন কুমারগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল। তদন্তে সামনে আসে ভয়ঙ্কর চিত্র— দীর্ঘদিন ধরেই মহাবুর মেয়েটিকে উত্যক্ত করত। বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে চাপ, বাড়িতে ঢুকে মারধর— সব মিলিয়ে ভয়ঙ্কর হয়রানির ফাঁদে জড়িয়ে পড়েছিল অসহায় নাবালিকাটি। মা–দাদা চটকল শ্রমিক হওয়ায় বেশিরভাগ সময়ে বাড়িতে একাই থাকত। আর সেই সুযোগেই নৃশংস পরিকল্পনা করেছিল মহাবুর ও তার দুই সঙ্গী।
অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনার দিন মহাবুর ফুঁসলিয়ে মেয়েটিকে মোটরবাইকে তোলে এবং গৌতম–পঙ্কজকে সঙ্গে নিয়ে কুমারগঞ্জের বেলখোর এলাকার কালভোটের পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে প্রথমে গণধর্ষণ করা হয়, তার [পরে খুন। প্রমাণ লোপাটে অভিযুক্তরা দেহে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পুলিশের তদন্তে প্রথমে ধরা পড়ে গৌতম—তার জবানবন্দিতেই সামনে আসে ঘটনার নৃশংস সত্যতা। পরে ধরা পড়ে মহাবুর ও পঙ্কজ। তিনজনের বিরুদ্ধেই গণধর্ষণ, খুন ও প্রমাণ লোপাটের মামলা রুজু হয়।