সংবাদদাতা, বনগাঁ: এবারের মাধ্যমিকে জোড়া সাফল্য পেল বনগাঁর কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। মেধা তালিকায় প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছে এই স্কুলের দুই পড়ুয়া। রাজ্যে চতুর্থ হয়েছে সমাদৃতা সেন ও ষষ্ঠ হয়েছে বিদিশা কুণ্ডু। স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত স্কুলের শিক্ষিকা থেকে অভিভাবকরা।
সমাদৃতার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৯। বনগাঁ কোড়ারবাগান এলাকায় বাড়ি এই ছাত্রীর। ছোটবেলা থেকেই সে মেধাবী। বাবা উদয় সেন ও মা শম্পা সেন দু’জনেই শিক্ষকতা করেন। মেয়ের সাফল্যে স্বভাবতই খুশির হাওয়া বাড়িতে। এদিন টিভিতেই প্রথম মেয়ের সাফল্যের কথা জানতে পারে সেন পরিবার। এরপর থেকেই আসতে থাকে শুভেচ্ছা বার্তা। বাড়িতে এসেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকে। সমাদৃতার কথায়, রেজাল্ট ভালো হবে জানতাম, কিন্তু চতুর্থ স্থান পাব, ভাবিনি। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। বাঁধা ধরা নিয়মের বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করেছে সমাদৃতা। এই কৃতী জানিয়েছে, পড়ার কোনও নির্দিষ্ট সময় ছিল না। যখন ভালো লাগত, তখন পড়তাম। মা শম্পা সেন বলেন, মেয়েকে পড়ার জন্য কখনও বলতে হতো না। ও নিজে থেকেই পড়ত। পড়াশোনার পাশাপাশি গান ও গিটার বাজাতে ভালোবাসে সমাদৃতা।
বনগাঁ কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের আরেক ছাত্রী বিদিশা পেয়েছে ৬৮৭ নম্বর। বনগাঁ রেলবাজার এলাকার বাসিন্দা সে। তার বাবা কিশোরকুমার কুণ্ডু ও মা ববি মিত্রও শিক্ষকতা করেন। বিদিশার ইচ্ছা ডাক্তার হওয়ার।
সেভাবেই নিজেকে তৈরি করছে সে। ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। তার কথায়, এই স্বপ্নকে সফল করতে হলে আরও পরিশ্রম করতে হবে। বিদিশার মা একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। বিভিন্ন সময়ে খবরের কাগজে মায়ের নাম দেখে চোখ চকচক করত তার। বিদিশা ভাবত, কোনও একদিন তার নামও উঠবে সংবাদপত্রে। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষাতেই। বাবা বলেন, মেয়ে রাত জেগে পড়ত। ভালো রেজাল্ট করবে জানতাম। ওর জন্য গর্বিত।
সমাদৃতা ও বিদিশা প্রথম দশে জায়গা পাওয়ায় খুশি স্কুলের শিক্ষিকারা। তাঁদের কথায়, স্কুলের ইতিহাসে এটাই সর্বোত্তম রেজাল্ট। প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী উকিল সরকার বলেন, আজ খুব আনন্দের দিন। শিক্ষকতা জীবনে এটা বড় প্রাপ্তি। আমরা সকলেই খুশি।
এই স্কুলের ১৬০ জন পরীক্ষার্থীই পাশ করেছে। সমাদৃতা ও বিদিশার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বনগাঁবাসী। স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রী ও এই স্কুলেরই শিক্ষিকা পদ্মাবতী মণ্ডল ঘোষ বলেন, আজ খুব গর্ব হচ্ছে। ওরা আমাদের স্কুলের মুখ উজ্জ্বল করেছে।