• উত্তর ২৪ পরগনার মুখ উজ্জ্বল করল ৯ রত্ন
    বর্তমান | ২০ মে ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: মুখস্থ নয়, অন্তস্থ করেই আমার সাফল্য এসেছে। সারাদিন পড়ার কোনও বাঁধাধরা সময় ছিল না। যখন ভালো লাগত, পড়তাম। ৩০ মিনিট অন্তর একটু বিরতি নিতাম। এতে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ে। ভবিষ্যতের পরীক্ষার্থীদের এভাবেই বার্তা দিল মাধ্যমিকে তৃতীয় স্থানাধিকারী দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা দেউলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সৌম্যদীপ মল্লিক। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯০। সৌম্যদীপের কথায়, বাবা-মা আমাকে স্বপ্ন দেখাত। আর তা পূরণ করার জন্য আমি সারাদিন ৯-১০ ঘণ্টা করে পড়তাম। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলতে ভালো লাগে। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চায় এই কৃতী। সৌম্যদীপের মা রিমা মল্লিক বলেন, পড়াশোনার প্রতি ছেলের প্রচণ্ড আগ্রহ। ছেলের এই সাফল্যে আমরা খুবই খুশি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখ নিজাম হোসেন ও বাংলার শিক্ষিকা সেরিনা খাতুন বলেন, সৌম্যদীপের এই সাফল্য স্কুলের নাম উজ্জ্বল করল।

    অন্যদিকে, বসিরহাটের তিনজন রাজ্যে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে। ৬৯০ নম্বর পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে টাকি রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র অর্ক মণ্ডল। অর্কর ইচ্ছা বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার। দিনে ৬/৭ ঘণ্টা পড়ত সে। বসিরহাট পূর্ণচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয় থেকে সপ্তম স্থান অধিকার করেছে সুচেতনা রায়। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬। সে বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করতে চায়। টাকি রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র তন্ময় ঘোষ মেধা তালিকায় দশম স্থান অধিকার করেছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৩। আগামী দিনে সে ডাক্তার হতে চায়। মাধ্যমিকে দশম স্থান অধিকার করল অশোকনগর বয়েজ সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্র তনয় টিকাদার। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৩। তনয় বলে, দিনে ৭/৮ ঘণ্টা পড়তাম। ভবিষ্যতে আইএএস অফিসার হতে চাই। একমাত্র ছেলের সাফল্যে খুশি বাবা অভিজিৎ টিকাদার এবং মা প্রীতিকা টিকাদার।

    এদিকে, উল্টো ছবি বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। বরানগর থেকে কাঁচরাপাড়া— এই শিল্পাঞ্চল এবার হতাশ করেছে মাধ্যমিকে। এ বছর প্রথম দশের মেধা তালিকায় ঠাঁই পায়নি এই মহকুমার কেউই। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা, পড়ুয়া, অভিভাবকরা। এমনকী, প্রতি বছর মেধা তালিকায় থাকা রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনও জায়গা করতে পারেনি এবার।  

    রহড়ায় ছাত্রীদের স্কুল ভবনাথ ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষিকা রীনা ভৌমিক বলেছেন, আমাদের ১৫ জন মেয়ে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে। কিন্তু কেউই প্রথম দশের মেধা তালিকায় স্থান পায়নি। আরও অনুশীলনের দরকার ছিল। 

    বারাকপুরের রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন থেকে এবার ৮৭৫ জন পরীক্ষায় বসেছিল। তারা প্রত্যেকে পাশ করলেও মেধা তালিকায় কেউ নেই। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ মিশনের শিক্ষক থেকে কর্তৃপক্ষ। মিশনের সচিব স্বামী নিত্যরুপানন্দজি মহারাজ বলেছেন, আমাদের ৫৭৮ জন প্রথম বিভাগে পাশ করেছে। সর্বোচ্চ নম্বর ৬৭১। বিশেষভাবে সক্ষম পাঁচজন পড়ুয়াও পাশ করেছে।

    নৈহাটি নরেন্দ্র নিকেতনের প্রধান শিক্ষক শান্তনু কুণ্ডুর কথায়, করোনার জন্য এই ছাত্ররা অষ্টম এবং নবম শ্রেণীতে স্কুলে এসে পড়তে পারেনি। ওরা একবারে দশম শ্রেণীতে ক্লাস করতে আসে। আমাদের ৫২ জন ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে। বরানগর নরেন্দ্রনাথ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক বললেন, এবার প্রথম বিভাগে পাশের হার কমেছে। কাঁচরাপাড়ার হার্নেট হাইস্কুল গত কয়েক বছর মেধা তালিকায় জায়গা পেলেও এবার কেউ র‌্যাঙ্ক করতে পারেনি। একই বক্তব্য হালিশহরের রামপ্রসাদ স্কুলের।
  • Link to this news (বর্তমান)