গত ১১ মে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। এর পর হঠাৎ আজ রাত ১১টা নাগাদ অর্ডিন্যান্স এনে দশ পাতার গেজ়েট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ ও বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। (দিল্লির) মুখ্যমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারপার্সন। সদস্য হিসেবে থাকবেন মুখ্যসচিব এবং প্রিন্সিপাল স্বরাষ্ট্রসচিব। নিয়োগ ও বদলি সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত এই কর্তৃপক্ষ ভোটাভুটির মাধ্যমে চূড়ান্ত করবেন। মতবিরোধ হলে শেষ কথা বলবেন উপরাজ্যপাল।
এই অর্ডিন্যান্স অবশ্য সংসদের দুই কক্ষে পাশ করাতে হবে মোদী সরকারকে। রাজ্যসভায় সংখ্যালঘু বিজেপির বিরুদ্ধে এ নিয়ে বিরোধীরা এককাট্টা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী অতিশী বলেছেন, ‘‘এ আদালতের অবমাননা। দিল্লি সরকার এবং সুপ্রিম কোর্টকে ভয় পাচ্ছে কেন্দ্র।’’ এই অর্ডিন্যান্স সংসদের সার্বিক সমর্থন পাবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি টুইট করেছেন, ‘স্পষ্টতই এটা এক খারাপ এবং হেরে যাওয়া নির্লজ্জের কীর্তি।’ এ দিকে বিজেপির মুখপাত্র আর পি সিংহের বক্তব্য, ‘‘‘খুব জরুরি সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। কেজরীওয়াল সরকার অফিসারদের ভয় দেখাচ্ছিল। দুর্নীতির ফাইল নষ্ট করছিল।’’
দিল্লি সরকারের অভিযোগ ছিল, শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরেও কেন্দ্রের প্রতিনিধি তথা উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনা আমলাদের রদবদলের ফাইল আটকে রেখে দিয়েছেন। এ নিয়ে আজ সকালে দিল্লির পুরো মন্ত্রিসভা উপরাজ্যপালের বাসভবনে পৌঁছে যায়। অতিশী সেখানেই বলেছিলেন, ‘‘শুনছি সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত পাল্টাতে অর্ডিন্যান্স আসছে।’’ দীর্ঘ অপেক্ষার পরে উপরাজ্যপালের দেখা পান অতিশীরা। কিন্তু সাক্সেনা এর পরেই দিল্লির মন্ত্রীরা অসাংবিধানিক আচরণ ও গা-জোয়ারি করছেন বলে অভিযোগ তুলে কেজরীওয়ালকে চিঠি লেখেন। তাঁর সঙ্গে বৈঠকেও বসেন। তখনও বোঝা যায়নি, আজ রাতেই অতিশীর আশঙ্কা সত্যি হয়ে যাবে। তবে অর্ডিন্যান্সের পরেও আইএএস এ কে সিংহের বাড়তি দায়িত্ব সংক্রান্ত কেজরীওয়াল সরকারের প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন উপরাজ্যপাল।