• সিপিএম ও তৃণমূলের সংঘর্ষে তপ্ত চন্দ্রকোণা
    বর্তমান | ০৩ জুলাই ২০২৩
  • সংবাদদাতা, ঘাটাল: ভোটের আগে শেষ রবিবার প্রচারের দিন সাতসকালে রাজনৈতিক সংঘর্ষ উত্তপ্ত হয়ে উঠল চন্দ্রকোণা থানার কৃষ্ণপুর। সিপিএম-আইএসএফ জোটের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০জন জখম হয়েছেন। আইএসএফ প্রার্থী নজিবুর রহমান মণ্ডল সহ উভয় পক্ষের পাঁচজনকে চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ঘটনার পরই কৃষ্ণপুর গঞ্জ এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এলাকা থমথমে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই এলাকার সমস্ত দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পুলিস জানিয়েছে, এদিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ সংঘর্ষের খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এলাকায় পুলিসি টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উভয় পক্ষই আলাদা-আলাদাভাবে অভিযোগ করেছে। কিন্তু এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

    তৃণমূলের কৃষ্ণপুর এলাকার নেতা তথা চন্দ্রকোণা-২ ব্লক কমিটির সদস্য রাকেশ সরকার বলেন, এদিন থানার অনুমতি নিয়েই কৃষ্ণপুর গ্রামে খন্দকার পাড়ায় আমাদের দলের প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার চলছিল। কৃষ্ণপুর এলাকায় সিপিএমের কয়েকজন কর্মী নিজেদের আইএসএফের সমর্থক বলে দাবি করে এলাকায় কয়েকদিন ধরেই হুমকি দিচ্ছিল। এদিন প্রচার শুরু হতে তারাই আমাদের কর্মীদের উপর অতর্কিতে আক্রমণ শুরু করে। লাঠি ও ইট দিয়ে আমাদের কর্মীদের এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করে। কৃষ্ণপুরে আমাদের পার্টি অফিসে হামলা চালায়। দলীয় পতাকা ও ব্যানার ছিঁড়ে দেয়। আমাদের ছ’জন কর্মী জখম হয়েছেন।

    তৃণমূলের আর এক নেতা আসানুল্লাহ খান বলেন, সিপিএম-আইএসএফের হামলার এই দৃশ্য দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা স্তম্ভিত হয়ে যান। আমাদের কয়েকজন কর্মী-সমর্থকের উপর মারধর চলছে দেখে তাঁরাই প্রতিরোধ শুরু করেন। তারপরই আমরা ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যাই। আসলে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় এমনিতেই ওরা প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছিল না। তাই সিপিএমের কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল সমর্থক আইএসএফের হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারাই এই সন্ত্রাস চালাচ্ছে। 

    সিপিএমের চন্দ্রকোণা এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুস্মিত পাল বলেন, স্থানীয়রাই বলতে পারবেন কারা এদিন আক্রমণ শুরু করেছিল। এদিন সিপিএম সমর্থিত ভগবন্তপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের আইএসএফ প্রার্থী নজিবুর রহমান মণ্ডল বাড়িবাড়ি প্রচার করছিলেন। সেই সময় তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী লাঠি নিয়ে পেছন দিক থেকে প্রার্থীর উপর আক্রমণ শুরু করে। ফলে তাঁর মাথা ফেটে যায়। বেশ কয়েকজন সিপিএম-আইএসএফ প্রার্থী জখম হন। শুধু তাই নয়, সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী পায়েল রায়ের বাড়ি গিয়ে তৃণমূলের গুণ্ডারা হামলা চালায়। পায়েলদেবীর শ্বশুরকে মারধর করে। এদিন তৃণমূলের হামলায় আমাদের মোট সাতজন জখম হয়েছেন। তারমধ্যে আইএসএফ প্রার্থী নজিবুর রহমান মণ্ডলের আঘাত গুরুতর। এছাড়াও ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্য এক আইএসএফ প্রার্থী মহম্মদ আব্দুল্লাহও জখম হয়েছেন। 

    প্রসঙ্গত, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১২টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছে। বিজেপি মাত্র একটি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। সিপিএম তিনটি আসনে এবং আইএসএফ মোট ছ’টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)