• ডুয়ার্সে বন্যা নিয়ে মন্ত্রীর নিশানায় কেন্দ্র
    আনন্দবাজার | ১৯ জুলাই ২০২৩
  • ডুয়ার্সে বন্যা নিয়ন্ত্রণে সদর্থক কোনও ভূমিকা নিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার— বন্যা পরিস্থিতির জেরে ক্ষয়ক্ষতি দেখতে আলিপুরদুয়ারে এসে মঙ্গলবার এমনই অভিযোগ করলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। এ দিকে, সেচমন্ত্রী জেলায় এলেও কালচিনির মেচপাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে না-যাওয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষোভপ্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।উত্তরকন্যায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষ করে সোমবার রাতেই আলিপুরদুয়ারে পৌঁছন সেচমন্ত্রী। এ দিন সকালে তিনি প্রথমে যান আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের শালকুমারের নতুনপাড়ায়। সেখানে শিসামারা নদী বাঁধের জায়গাগুলি ঘুরে দেখেন। সেখান থেকে চলে যান জয়গাঁর একাধিক এলাকায়। বাসরা নদীর ভাঙনের পাশাপাশি, দাড়াগাঁও ও বিবাড়িতে যান। সাম্প্রতিক বন্যায় বিবাড়ি এলাকায় গোবরজ্যোতি নদীর সেতু সংলগ্ন রাস্তার অংশ ভেসে গিয়েছিল।

    জেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে সেচমন্ত্রী এ দিন অভিযোগ করেন, “ভুটান পাহাড় থেকে জল যখন আসছে, তখন আমাদের পুরো এলাকা ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জল আটকানো বা জল কোন পথে যাবে, তা নিয়ে ওদের (ভুটান) কোনও নীতি নেই। ওরা যদি মনে করে এ ব্যাপারে আমাদের সাহায্য নেবে, সেটা আমরা করতে পারি।’’ মন্ত্রীর কথায়, ‘‘কিন্তু মনে রাখতে হবে, ওরা একটা রাষ্ট্র, আমরা একটা রাজ্য। অতএব, এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের সদর্থক ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার কেন সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে না, কেন ভুটানের সঙ্গে কথা বলছে না, আমরা বুঝতে পারছি না।”

    আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা কেন এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছেন না, সে প্রশ্নও তোলেন সেচমন্ত্রী। তবে বার্লা বলেন, “এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় কথা বলতে আমি প্রস্তুত। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রশাসনের তরফে আমাকে কোনও রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না। তবু দিল্লিতে আমি কথা বলব।”

    এ দিকে, সেচমন্ত্রী জেলায় এলেও, তাঁদের এলাকায় যাননি বলে অভিযোগ তুলে এ দিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন মেচপাড়ার পাকা লাইনের বাসিন্দারা। মন্ত্রী আসবেন শুনে এ দিন সকাল থেকে অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল লামা বলেন, “সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতিতে জেলার অন্য এলাকার তুলনায় আমাদের মেচপাড়া পাকা লাইনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কয়েক দিন ধরে এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা বাড়ির বাইরে রাত কাটাচ্ছে। পুরো এলাকা পলিমাটিতে ভরে রয়েছে। এত ক্ষতি হওয়া হলেও, মন্ত্রী তা দেখতে এলেন না। আমাদের কী ওঁরা মানুষ বলে গণ্য করেন না?” আর এক বাসিন্দা কিরণ গুরুং বলেন, “মন্ত্রী আসবেন বলে আশা করে বাগানের অধিকাংশ শ্রমিক এ দিন কাজে যাননি, যাতে মন্ত্রী এলে তাঁর কাছে সকলে ক্ষয়ক্ষতি জানাতে পারেন।”

    কালচিনির বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামার অভিযোগ, “রাজ্যের মন্ত্রীরা উত্তরবঙ্গে পরিদর্শনের নাম করে শুধু ঘুরতে আসেন। সে জন্যই সবচেয়ে ক্ষতি হওয়া মেচপাড়ায় মন্ত্রী গেলেন না।” জেডিএ চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা পাল্টা বলেন, “বন্যা পরিস্থিতির কথা শুনে মন্ত্রী কলকাতা থেকে আলিপুরদুয়ারে এসেছেন। কিন্তু বিজেপির আলিপুরদুয়ারের সাংসদ-বিধায়কদের তো কোথাও দেখা যাচ্ছে না।”

  • Link to this news (আনন্দবাজার)