• নিউটাউনে সাপের কামড়ে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু যুবকের, চিন্তায় নাগরিকরা
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ জুলাই ২০২৩
  • সাপের কামড়ে প্রাণ গেল এক যুবকের। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার শহরতলি নিউটাউন বিধানসভা এলাকায়। সাপে কামড়ানোর পর প্রথমেই ওই যুবককে নিউ টাউনের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়নি। প্রথমে গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই যুবকের চিকিৎসা চলে। পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আর জি কর হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। সেক্ষেত্রে ওই যুবককে প্রথমেই নিউ টাউনের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে যুবককে বাঁচানো সম্ভব হতো বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। ওই যুবকের নাম সৌরভ নস্কর।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক নিউটাউন বিধানসভা এলাকার আকন্দকেশরী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সাপুরজি এলাকায় একটি নিরাপত্তা সংস্থায় কাজ করতেন। সেখানেই একটি জলায় স্নান করতে নেমে ঘটে বিপত্তি। ওই জলায় সাপে কামড়ে দেয় ওই যুবককে। প্রথমে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেননি। পরে বাড়ি ফিরে তাঁর শরীরে জ্বালা যন্ত্রনা শুরু হয়।  আকন্দকেশরী থেকে তাঁকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় ভাঙড়ের জিরানগাছা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে ওই যুবককে আর জি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় সৌরভের। চিকিৎসকদের অনুমান, চিকিৎসায় দেরি হওয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল সপ্তাহখানেক আগেই। উত্তর প্রদেশের এক ছাত্র নিউ টাউনের রাস্তায় সাপের কামড় খেয়েছিলেন। প্রথমে তাঁকে জিরানগাছা ও পরে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এক্ষেত্রেও চিকিৎসায় দেরি হওয়ার কারণে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল।

    প্রসঙ্গত, বর্ষা নামতেই নিউ টাউনে বেড়েছে সাপের উপদ্রব। বিশেষ করে কালাজ, চন্দ্রবোড়ার মত সাপের উপদ্রব এই এলাকায় বেড়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন নিউটাউনের বাসিন্দারা। এমনকী বিভিন্ন আবাসনে অ্যান্টিভেনামও কিনে রাখা হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাপের কামড়ে দুজনের মৃত্যু হওয়ায় উদ্বিগ্ন নিউ টাউন কলকাতা ডেভলপমেন্ট অথরিটি। এ বিষয়ে সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সাপের উপদ্রব বেশি হওয়ার কারণে ওই এলাকার স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে অ্যান্টি ভেনাম রাখার পাশাপাশি চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে যাতে ২৪ ঘণ্টা সাপের কামড়ের চিকিৎসা করা হয় তার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছেও অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

    সাপের উপদ্রব নিয়ে আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিন সাপের কামড়ে মৃত্যু হওয়া ওই যুবকের দাদা সৌভিক নস্কর বলেন, তাঁর ভাই নিউ টাউনের একটি বাসস্ট্যান্ডে নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন। কিন্তু, নিউ টাউনে যে সাপের কামড়ের চিকিৎসা করা হয় তা তাদের জানা ছিল না। সেই কারণে বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাঁদের ছুটতে হয়েছিল। চিকিৎসায় দেরি হয়ে যাওয়ার কারণে তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু হয়। তাই এ নিয়ে প্রচার চালানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়দের একাংশ।

    প্রসঙ্গত, সাপের কামড়ের চিকিৎসার জন্য নিউ টাউনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন আবাসনে চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স এবং স্নেক ক্যাচারের নম্বর সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু নিউ টাউন বিধানসভার বাইরে গ্রাম অঞ্চলে সাপে কামড়ানোর চিকিৎসা এখনও সেরকম ভাবে নেই বলেই অভিযোগ।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)